আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি উত্তপ্ত। গত সপ্তাহান্তে একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা না হলে রুশ তেলের উপর শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। পাশাপাশি, ইরানের পরমাণু সমঝোতা না হলে ‘বোমা বর্ষণ’-এর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
NBC নেটওয়ার্কের সাংবাদিক ক্রিস্টেন ওয়েলকারের সঙ্গে এক ফোনালাপে ট্রাম্প জানান, ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক মন্তব্যে তিনি “খুব রাগান্বিত” এবং “ক্ষিপ্ত”। পুতিন সম্প্রতি ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিকল্প নেতৃত্ব বিবেচনা করা উচিত। ট্রাম্প এই মন্তব্যকে অকার্যকর বলে উড়িয়ে দেন।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি রাশিয়া এবং আমি ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধে কোনও চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারি, এবং যদি আমি মনে করি এটি রাশিয়ার দোষ… তবে আমি রুশ তেলের উপর দ্বিতীয় পর্যায়ের শুল্ক আরোপ করব।”
রাশিয়ার উপর এই শুল্ক আরোপের ফলে চীন ও ভারত সহ যেসব দেশ রাশিয়ার তেল আমদানি করছে, তাদের উপরও প্রভাব পড়বে। ট্রাম্প আরও জানান, পুতিন তার রাগ সম্পর্কে অবগত থাকলেও তিনি এখনও রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ বজায় রেখেছেন।
ইরানকে সামরিক হুমকি
রাশিয়া ইস্যুতে বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্প ইরানকেও নতুন পরমাণু আলোচনায় আসার জন্য হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, “যদি তারা কোনও চুক্তিতে না আসে, তবে বোমা বর্ষণ হবে।”
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের প্রথম শাসনকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে ইরানের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, ওমানের মধ্যস্থতায় পরোক্ষ আলোচনা চলতে পারে। তবে তিনি সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন।
ইরানের শীর্ষ নেতা বলেছেন, “আমরা আলোচনার বিরোধী নই। তবে তাদের অবিশ্বাসযোগ্য সিদ্ধান্ত আমাদের সমস্যায় ফেলেছে। তারা যদি বিশ্বাসযোগ্য সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত।”
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই টানাপোড়েন ঘিরে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।