২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হয়ে পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হতে যাচ্ছেন। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্যমতে, ট্রাম্প ২৭৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন, যা জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ভোটের সীমা অতিক্রম করেছে। এর মাধ্যমে তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করেছেন, যিনি পেয়েছেন ২২৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।
চমকপ্রদ জয়
কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কঠিন প্রতিযোগিতা হওয়ার আশা করা হলেও, ভোটগণনার পর চিত্রটি অন্যরকম হয়েছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেকক্ষণ ২৬৭ ভোটের আশেপাশে ছিলেন, তবে উইসকনসিন রাজ্যে জয়লাভের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ২৭০ ভোটের সীমা পেরিয়ে যান। উইসকনসিন ছাড়াও তিনি জিতেছেন নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া এবং পেনসিলভানিয়ার মতো সুইং স্টেটগুলোতে।
সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ট্রাম্পের
দ্বিতীয় মেয়াদে আসীন হওয়ার পথে ট্রাম্প দেশ জুড়ে সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি এটিকে “অভূতপূর্ব রাজনৈতিক বিজয়” হিসেবে উল্লেখ করেন। ফ্লোরিডার পাম বিচ কাউন্টি কনভেনশন সেন্টারে মঞ্চে তিনি পত্নী মেলানিয়া এবং কনিষ্ঠ পুত্র ব্যারনকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় ঘোষণা করেন। ট্রাম্প বলেন, “আমেরিকা আমাদের এক অপ্রতিরোধ্য এবং শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে। আজকের রাতে আমরা ইতিহাস গড়েছি। এটি আমেরিকানদের জন্য একটি মহৎ বিজয়। এই বিজয় আমাদের ‘আমেরিকাকে আবার মহান’ করার সুযোগ এনে দিয়েছে।”
ট্রাম্পের নতুন মেয়াদের লক্ষ্য
বিজয়ের পর ট্রাম্প তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে তিনি অভিবাসন এবং সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধানের ওপর জোর দেন। এ ছাড়াও, তিনি দেশকে ‘সুস্থ’ করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ট্রাম্পের জন্য ঐতিহাসিক মাইলফলক
একশো বছরেরও বেশি সময় পর দুই মেয়াদে আলাদা সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে বিজয়ী হলেন ট্রাম্প। ১৮৯২ সালের নির্বাচনে গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের পর প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও ক্ষমতায় ফিরলেন তিনি। এছাড়া, তিনি প্রথম অপরাধী সাব্যস্ত ব্যক্তি যিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন এবং ৭৮ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বয়সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাসে যোগ করল।
প্রাক-নির্বাচনী জনপ্রিয়তা
প্রায় সব নির্বাচনী পূর্বাভাসে কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। বিশেষ করে যখন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আকস্মিকভাবে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান, তারপরও কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তায় বড় উত্থান দেখা যায়। তাঁকে সমর্থন জানাতে এগিয়ে এসেছিলেন অনেক সেলিব্রিটি, যেমন টেলর সুইফট, বেয়ন্স এবং এমিনেম।
যদি কমলা হ্যারিস নির্বাচিত হতেন, তবে তিনি হতেন প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ এবং দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান প্রেসিডেন্ট।