ইংল্যান্ডে ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর, গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডানপন্থী প্রতিবাদকারীদের। তিনি বলেন, এই দাঙ্গায় অংশগ্রহণের জন্য তারা ‘অনুশোচনা’ করবে। গত সপ্তাহে তিন শিশুর হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারের রথেরহামে শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি হোটেলের জানালা ভাঙচুর করে মুখোশধারী অভিবাসনবিরোধী প্রতিবাদকারীরা।
গত সোমবার উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের সাউথপোর্ট শহরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা নিয়ে ভুল তথ্যের কারণে বিভিন্ন শহর অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। অভিবাসনবিরোধী প্রতিবাদকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার, মাত্র এক মাস আগে কনজারভেটিভদের বিরুদ্ধে লেবার পার্টির বিশাল জয়ের পর নির্বাচিত হন। এই অশান্তি তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পড়ুন। ঢাকায় ছাত্র আন্দোলনের সংঘর্ষে নিহত ১০১, দেশজুড়ে ইন্টারনেট শাটডাউন
স্টারমার টিভি ভাষণে বলেন, “আপনারা এই বিশৃঙ্খলায় অংশগ্রহণের জন্য অনুশোচনা করবেন। যারা সরাসরি বা অনলাইনে এই কর্মে উস্কানি দিচ্ছেন, তারা পালিয়ে যাবেন না।” তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের ডানপন্থী গুন্ডামির কোন ন্যায্যতা নেই” এবং অপরাধীদের “বিচারের আওতায় আনা হবে”।
বিবিসির সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, রথেরহামের হলিডে ইন এক্সপ্রেস হোটেলে দাঙ্গাকারীরা জোর করে প্রবেশ করছে এবং একটি জ্বলন্ত বর্জ্যপাত্র ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সেখানে শরণার্থীরা ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
সেখানে ১০ জন অফিসার আহত হন, তবে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলের কোনও কর্মী বা অতিথি আহত হননি।
নর্থইস্টার্ন ইংল্যান্ডের মিডলসব্রো শহরে শত শত প্রতিবাদকারী দাঙ্গা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কিছু প্রতিবাদকারী ইট, ক্যান ও পাত্র ছুঁড়ে মারে।
প্রতিবাদকারীরা সেখানে এএফপি ক্রুর একটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় এবং ভেঙে ফেলে। তবে সাংবাদিকরা আহত হননি।
নতুন অশান্তির খবর পাওয়া গেছে যখন পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার থেকে লিভারপুল, ম্যানচেস্টার, ব্রিস্টল, ব্ল্যাকপুল ও হাল সহ উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে ১৫০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দাঙ্গাকারীরা ইট, বোতল এবং ফ্লেয়ার পুলিশদের দিকে ছুঁড়ে মারেন, যার ফলে একাধিক অফিসার আহত হয়েছেন। তারা দোকান লুট ও আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ইসলামবিরোধী স্লোগান দেন।
এর আগে ২০১১ সালে উত্তর লন্ডনে একজন মিশ্র-জাতির মানুষকে পুলিশ হত্যার পর ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। তার পর এই রকম হিংসা দেখেছে ইংল্যান্ড।
লিভারপুলের খ্রিস্টান, মুসলিম ও ইহুদি ধর্মীয় নেতারা শান্তির জন্য যৌথ আহ্বান জানিয়েছেন।
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের পুলিশ ফেডারেশনের টিফানি লিঞ্চ বলেন, “আমরা এখন দেখছি এটি (সমস্যা) শহরে ছড়িয়ে পড়ছে।”