নয়াদিল্লি: ইয়েমেনে বসবাসকারী কেরলের নার্স নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদন দিয়েছেন ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি রশাদ আল-আলিমি। ২০১৭ সালে ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদিকে হত্যার দায়ে নিমিষাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক মাসের মধ্যেই ফাঁসির আদেশ কার্যকর হতে পারে।
এ ব্যাপারে ভারতের বিদেশমন্ত্রক (MEA) জানিয়েছে, এই মামলার বিষয়ে তারা অবগত এবং নিমিষার পরিবার সংশ্লিষ্ট বিকল্পগুলোর সন্ধান করছে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, “সরকার এই বিষয়ে সমস্ত রকম সহায়তা প্রদান করছে।”
রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নিমিষার পরিবারের জন্য চরম দুসংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে। তাঁর মা প্রেমা কুমারী বর্তমানে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় রয়েছেন। পাশাপাশি, নিহতের পরিবারের সঙ্গে আলোচনাও চালাচ্ছেন। তবে, এই আলোচনা সেপ্টেম্বরে বাধাপ্রাপ্ত হয়, কারণ ইয়েমেনে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আমির একটি আগের বকেয়া ফি হিসাবে ২০,০০০ ডলার (প্রায় ১৬.৬ লক্ষ টাকা) দাবি করেন।
ইতিমধ্যেই আমিরকে ১৯,৮৭১ ডলার মিটিয়ে দিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। তবে তিনি মোট ৪০,০০০ ডলার ফি দাবি করেছেন। এই ফি পরিশোধের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছে।
কেরলের পালাক্কড়ের বাসিন্দা নিমিষা প্রিয়া একজন প্রশিক্ষিত নার্স, ইয়েমেনের বাসিন্দা তালাল মাহদির সঙ্গে একটি ক্লিনিক তৈরি করেছিলেন। পরে ক্লিনিকের আয় নিয়ে দুজনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। নিমিষার অভিযোগ, মাহদি তাঁর সঙ্গে হিংসাত্মক আচরণ শুরু করেন। নিমিষার অভিযোগ অনুযায়ী, মাহদি তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাঁকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করেন।
২০১৭ সালে, নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধারের জন্য মাহদিকে শান্ত করতে একটি শক্তিশালী ঘুমের ইঞ্জেকশন ব্যবহার করার চেষ্টা করেন নিমিষা। তবে, অতিরিক্ত ডোজে মাহদির মৃত্যু হয়।
বর্তমানে, নিমিষা প্রিয়ার মুক্তি মাহদির পরিবারের ক্ষমার উপর নির্ভর করছে।