রাষ্ট্রপুঞ্জ: “আপনারা সাহস করেন কী করে?” জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় কড়া ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় এ ভাবেই বিশ্বনেতাদের উপর তাঁর রাগ প্রকাশ করলেন গ্রেটা থুনবার্গ।
সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জ আয়োজিত ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিট’-এর সূত্রপাত করলেন সুইডিশ ‘ক্লাইমেট কিড’। জলবায়ু নিয়ে বিশ্ব জুড়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের যে আন্দোলন চলছে, ১৬ বছরের গ্রেটা তার পথিকৃৎ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় বিশ্ব জুড়ে গণ-আন্দোলনের ডাক দিলেন মোদী
জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় ২১ সেপ্টেম্বর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণ প্রজন্মের লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার দিন দুয়েক পরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার (জেনারেল অ্যাসেম্বলি) বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে আসা বিশ্বনেতারা সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেসের ডাকে সোমবার ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট সামিট’-এ শামিল হন।
তাঁদের সম্মেলনের উদ্দেশ্য, কার্বন নিঃসরণ বন্ধের যে সব প্রচেষ্টা থমকে গিয়েছে, তাতে নতুন করে প্রেরণা জোগানো।
গ্রেটা দৃশ্যতই একটু আবেগমথিত ছিলেন। শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতেই কড়া মন্তব্য করে সবাইকে আলোড়িত করেন। তিনি বলেন, যে সব প্রজন্ম সব চেয়ে বেশি দূষণ সৃষ্টি করেছে তারাই তাঁর এবং তাঁর প্রজন্মের ঘাড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অত্যন্ত বিরূপ প্রভাবের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।
“গোটা ব্যাপারটাই ভুল। আমার তো এখানে আসার কথা ছিল না। আমার তো সাগরের অপর পারে স্কুলে থাকার কথা ছিল। তবু আপনারা কিছু আশার সন্ধানে আমাদের মতো তরুণ প্রজন্মের কাছে আসছেন। আপনারা সাহস করেন কী করে?” মন্তব্য করেন গ্রেটা।
গ্রেটা বলেন, “আপনারা শুধু ফাঁকা বুলি আওড়েছেন আর আমার স্বপ্ন, আমার শৈশব চুরি করে নিয়েছেন।”
সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেসের ডাকা এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হল, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি আগেই সংশ্লিষ্ট সরকারগুলিকে বলে দিয়েছিলেন, কিছু বাস্তব পরিকল্পনা দেওয়ার থাকলে তবেই শীর্ষ সম্মেলনে বলার যোগ্যতা অর্জন করা যাবে।
গুতেরেস তাঁর প্রারম্ভিক মন্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করা যে কতটা জরুরি সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প বর্জন করার ডাক দেন।
“প্রকৃতি ক্রুদ্ধ হয়েছে। আর আমরা যদি ভাবি আমরা প্রকৃতিকে বোকা বানাতে পারি, তা হলে আমরা নিজেরাই বোকা বনব কারণ প্রকৃতি সব সময়েই প্রত্যাঘাত করে এবং সারা বিশ্ব জুড়েই প্রকৃতি প্রচণ্ড ক্রোধোন্মত্ততায় প্রত্যাঘাত করছে” – মন্তব্য করেন গুতেরেস।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সন্দিহান দুই বিশ্বনেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলীয় প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারো এই শীর্ষ সম্মেলনে আসবেন বলে কেউ আশা করেননি। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এ দিন শ্রোতাদের মধ্যে দেখা যায়।