মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাণিজ্যযুদ্ধ বাধাতেই চায়, তবে তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত। স্পষ্ট জানিয়ে দিল চিন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর, চিনের বিদেশ মন্ত্রক এক তীব্র প্রতিক্রিয়ায় জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র একটি দুর্বল অজুহাত হিসেবে ফেন্টানাইল সমস্যাকে ব্যবহার করে চিনা পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত চিনা দূতাবাস এক টুইটে লিখেছে,
“যদি যুদ্ধই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হয়, সেটা শুল্ক যুদ্ধ হোক বা বাণিজ্যযুদ্ধ, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত।”
ফেন্টানাইল ইস্যুতে চিন-মার্কিন টানাপোড়েন
ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, চিন ফেন্টানাইল তৈরির রাসায়নিক উপাদানের রফতানি বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে ওপিওড অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনের কারণে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
চিন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেন্টানাইল সংকট তাদের নিজেদের তৈরি করা সমস্যা।
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মতে, “আমরা বরং সহযোগিতা করেছি, অথচ তার স্বীকৃতি না দিয়ে, যুক্তরাষ্ট্র চিনকে দোষারোপ করছে। তারা শুল্ক বাড়িয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। আমাদের সাহায্যের জন্যই তারা এখন আমাদের শাস্তি দিচ্ছে।”
ট্রাম্প প্রশাসনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে চিন বলেছে, ভয় দেখানো কিংবা দমননীতি তাদের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, “চিনকে সমানভাবে সম্মান দেখিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই ফেন্টানাইল ইস্যু সমাধান সম্ভব”।
আরও বলা হয়েছে, “ভয় দেখিয়ে কিছুই পাওয়া যাবে না। চিনকে চাপে ফেলা যাবে না। চিনের বিরুদ্ধে চরম চাপ প্রয়োগ করলে, ভুল লোককে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে এবং তা ভয়াবহ ভুল হিসেবেই প্রমাণিত হবে।”
চিনের এই কঠোর অবস্থান ট্রাম্পের মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া প্রথম ভাষণের পরই প্রকাশ্যে এল। সেই ভাষণে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, চিন ও ভারতের মতো দেশগুলোর বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থা ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই চিনা পণ্যের উপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করেছে। নতুন ঘোষণার ফলে একটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
চিন দ্রুত এর পাল্টা জবাব দিয়েছে— মার্কিন কৃষি ও খাদ্যপণ্যের উপর ১০ শতাংশ-১৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে, যার মধ্যে গম, ভুট্টা ও তুলা অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ২৫টি মার্কিন কোম্পানির উপর রফতানি ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
চিন-মার্কিন এই বাণিজ্য বিরোধ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।