কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ব্রিটানিয়া বিস্কুটের উৎপাদন আগের মতোই চলবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অমিত মিত্র দাবি করেছেন, ব্রিটানিয়া সংস্থার এগজ়িকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ বেরি তাঁকে ফোন করে বলেছেন যে সংস্থা পশ্চিমবঙ্গের প্রতি ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
সোমবার ব্রিটানিয়া সংস্থা ঘোষণা করেছিল, তারা কলকাতার তারাতলার কারখানাটি বন্ধ করছে। এই ঘোষণার পরেই বিরোধীরা রাজ্যে উন্নয়নের ‘ভাটা’ এসেছে বলে অভিযোগ তোলেন। বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী বলেন, ‘‘কলকাতার তারাতলায় স্বাধীনতার সময় থেকে যে ব্রিটানিয়া বিস্কুট তৈরি হত, তা আর তৈরি হবে না। তারাতলায় যে শিল্পের কবরস্থান রয়েছে, সেখানে আর একটি কবর পোঁতা হবে।’’ তাঁর মতে, রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি করা উন্নয়নের জোয়ার আসলে বিভ্রান্তি।
তবে, অমিত মিত্রের বক্তব্যে স্পষ্ট, ব্রিটানিয়া পশ্চিমবঙ্গে তাদের ব্যবসা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘‘ব্রিটানিয়ার এগজিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ বেরি বিদেশ থেকে ফোন করে জানিয়েছেন, ব্রিটানিয়া এখন পশ্চিমবঙ্গে ১,০০০ থেকে ১,২০০ কোটি টাকার বিস্কুট তৈরি করছে এবং সেই উৎপাদন অব্যাহত থাকবে।’’ এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ তাদের বৃহত্তম বাজার এবং তারা রাজ্যে তাদের ব্যবসা আরও শক্তিশালী করতে চায়।
বরুণ বেরি জানান, ব্রিটানিয়ার নথিভুক্ত দফতর কলকাতায় রয়েছে এবং সেখানেই থাকবে। সংস্থার শেয়ার হোল্ডারদের বৈঠকও কলকাতায় হবে। বরুণ বিদেশ থেকে ফিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পুরো দল-সহ দেখা করে আলোচনা করবেন, কীভাবে ব্যবসা আরও শক্তিশালী করা যায়।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসও সরব হয়েছে। আকিব গুলজার-সহ কংগ্রেস কর্মীরা মঙ্গলবার ব্রিটানিয়া সংস্থার দফতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আকিব জানান, তাঁদের কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা বলতে গিয়েছিলাম, দয়া করে কারখানা তুলে নেবেন না। কেন রাজ্য সরকার, কেন কেন্দ্র মিটিয়ে দিচ্ছে না? এ সবের নেপথ্যে চক্রান্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষ তার শিকার। বৃহত্তর আন্দোলনে নামব আমরা।’’
অমিত মিত্রের এই আশ্বাসে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন রাজ্যের ব্রিটানিয়ার অস্থায়ী কর্মীরা। তবে বিরোধীরা এখনও এই ইস্যুতে সরব রয়েছেন এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।