শুক্রবার বিকালে ধর্মতলায় জমায়েতের ডাক দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর পক্ষ থেকে দেবাশিস হালদার নাগরিক সমাজকে অনুরোধ করেছেন তাঁদের লড়াইয়ের প্রতি সংহতি জানিয়ে এগিয়ে আসতে। শুক্রবার বিকেলে ধর্মতলার অনশনমঞ্চের পাশে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে শহরবাসীর সক্রিয় সমর্থন চাওয়া হয়েছে। দেবাশিসের আবেদন, “আমাদের সহযোদ্ধাদের সাহসিকতা ও সংকল্পের লড়াইয়ে পাশে দাঁড়ান, আপনারা আমাদের শক্তি।”
এ দিনই সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছে চিকিৎসকদের যৌথ প্ল্যাটফর্ম ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। চিকিৎসকদের যাবতীয় দাবি মেটাতে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। জুনিয়র এবং সিনিয়র চিকিৎসকরা বিগত তিন দিন ধরে একই দাবি নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানালেও এখনও কোনও সুরাহা হয়নি।
অন্যদিকে আশঙ্কাজনক শারীরিক অবস্থায় রয়েছেন অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তাঁর শরীরে গুরুতর জলশূন্যতা তৈরি হয়েছে এবং মূত্রে ‘কিটোন বডি’ পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁর চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন আরজি কর হাসপাতালের সিসিইউ ইনচার্জ চিকিৎসক সোমা মুখোপাধ্যায়। বোর্ডে আরও রয়েছেন নেফ্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক কানাইলাল কর্মকার, মেডিসিন বিভাগের সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বদীপ মজুমদার এবং চিকিৎসক সুজয় কুমার রায়।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আরজি করের চিকিৎসক সৈকত নিয়োগী ধর্মতলার মঞ্চে গিয়ে অনিকেতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানান, তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক এবং তাঁকে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। একইভাবে, আরেক অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরার অবস্থাও ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, অনিকেত ও স্নিগ্ধা দুজনকেই দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা জরুরি।
অনিকেতের অসুস্থতার পরেও বাকিরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। ধর্মতলার মঞ্চে তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য অনশন চালাচ্ছেন। টানা অনশনের কারণে তাঁদেরও শারীরিক অবস্থা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্নিগ্ধার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
চিকিৎসকদের দাবির প্রতি এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁদের ক্ষোভ বাড়ছে।