কলকাতা: আরজি করের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর ২৫টা দিন কেটে গেল। দোষীদের শাস্তির দাবিতে নাগরিকদের আন্দোলনে ভাটা তো পড়েইনি, উপরন্তু জোরদার হচ্ছে দিন দিন। রাজনৈতিক দলগুলো আলাদা করে কর্মসূচি নেওয়ার পাশাপাশি অরাজনৈতিকভাবে যে আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে তা এককথায় নজিরবিহীন। এ ধরনের গণ-আন্দোলন বাংলা আগে কখনও দেখেছে বলে মনে পড়ে না। সমাজের সব স্তরের মানুষ, সব পেশার মানুষ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে সোমবার-মঙ্গলবার কলকাতা দেখল জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। শেষ পর্যন্ত ডাক্তারদের দাবির কাছে নতিস্বীকার করে মিছিলকে লালবাজারের অনেকটা কাছে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে হল পুলিশকে। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হল কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে।
ইএম বাইপাসে মানববন্ধন। ছবি: রাজীব বসু।
এবার ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ আন্দোলনে শামিল হলেন চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে জড়িত পেশাদারেরা। মঙ্গলবার বিকেলে ইএম বাইপাস বরাবর তাঁরা পালন করলেন মানববন্ধন কর্মসূচি। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত নির্দিষ্ট কোনো সংগঠন এই কর্মসূচির ডাক দেয়নি। তবে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল।
দক্ষিণের পাটুলি থেকে সন্তোষপুর কানেক্টর, রুবি, সায়েন্স সিটি হয়ে উল্টোডাঙা পর্যন্ত ১৭ কিমি দীর্ঘ ইএম বাইপাসের বিভিন্ন জায়গায় এই অভিনব মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। বাইপাসের ধারে হাতে হাতে মিলিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে থেকে আরজি কর-কাণ্ডের দোষীদের শাস্তির দাবিতে সুশৃঙ্খল ভাবে মানববন্ধন কর্মসূচিতে শামিল হন কয়েক হাজার মানুষ। শুধু চিকিৎসা পেশার সঙ্গে যুক্তরাই নন, সাধারণ মানুষজনও এই কর্মসূচিতে শামিল হন। এমন ভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয় যে কোথাও যান চলাচলে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
সিপিএমের মহামিছিল। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে। ছবি: রাজীব বসু।
সিপিএমের মহামিছিল
আরজি কর কাণ্ডে ন্যায়বিচার ও অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে এবং স্বাস্থ্য-দুর্নীতির প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা দেখল বামেদের মহামিছিল। ‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো’— এই আহ্বানকে সামনে রেখে মিছিল শুরু হয় রাজাবাজার ট্রাম ডিপো থেকে। মিছিল যাওয়ার কথা ছিল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পর্যন্ত। কিন্তু পুলিশ শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে মিছিল আটকে দেয়।
বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়-সহ বাম নেতারা নেতাজি মূর্তির সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। কার্যত চলে অবরোধ।
আরও পড়ুন