কলকাতা: আরজি কর হাসপাতালে ট্রেনি ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে যে আন্দোলন চলছে, তা ছুঁয়ে গেল কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসকেও। সেখানে জ্বলল প্রতিবাদের মোমবাতি।
সোমবার আরজি কর কাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেল। এই ঘটনার বিচার চেয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠেছে, শুনানিও শুরু হয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের তীব্রতা কমেনি, বরং তা উত্তরোত্তর বাড়ছে। এবার এই আন্দোলনের আঁচ পৌঁছে গেল কলকাতার ঐতিহ্য কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে। মোমবাতির আলো, স্লোগানের গর্জনে ভরে গেল গোটা বাড়ি।
কফি হাউসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। ছবি: রাজীব বসু।
কফি হাউস ফের জানিয়ে দিল, কফি হাউস আছে কফি হাউসেই। বহু আন্দোলনের আঁতুড়ঘর এই কফি হাউস। আরজি কর আন্দোলনে সহমর্মিতা প্রকাশ করে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় কফি হাউসের সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিটি টেবিলে জ্বলে ওঠে মোমবাতি। আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে স্লোগান ওঠে। গাওয়া হয় প্রতিবাদের গান। গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। উঠে দাঁড়ালেন সকলে। এদিনের এই প্রতিবাদ ছিল একেবারেই অরাজনৈতিক। কফি হাউসে সেই সময়ে উপস্থিত সকলেই শামিল হল এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে।
সন্ধ্যায় শ্যামবাজারে মানববন্ধন। ছবি: রাজীব বসু।
ইতিমধ্যে কলকাতা শহরের বহু জায়গায় সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ধর্মতলা, শ্যামবাজার-সহ বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মানববন্ধন করেন।
আবার পথে তিন প্রধানের সমর্থকেরা। ছবি: রাজীব বসু।
আরজি করে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে সোমবার আবার পথে নামলেন কলকাতা ময়দানের তিন প্রধানের সমর্থকেরা। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা পা মেলান। ক্রীড়াপ্রেমী থেকে আইনজীবী, অভিনেতা থেকে জুনিয়র ডাক্তারেরাও এই মিছিলে যোগ দেন।
সিপিএমের লালবাজার অভিযান। ছবি: রাজীব বসু।
সিপিএমের লালবাজার অভিযান
আরজি কর কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার লালবাজার অভিযানে নামে বামেরা। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে মিছিল এগিয়ে যায়। কিন্তু লালবাজারের অনেক আগেই বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের মুখে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, লালবাজার অভিযানে গ্রেফতার হন বামেদের ১৪ জন কর্মী-সমর্থক। প্রতিবাদস্বরূপ রাস্তায় বসে পড়েন মিছিলকারীরা। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে ব্যারিকেডের সামনেই চলে অবস্থান। পরে ধৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যে পুলিশ কমিশনারের অপসারণের জন্য আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যকে সময়সীমা দিল সিপিএম। দলের তরফে মহম্মদ সেলিম ঘোষণা করেন, ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিপিকে সরানো না হলে ১৪ তারিখ থেকে লালবাজার ঘেরাও করে তাঁরা রাতভর ধর্নায় বসবেন।
আরও পড়ুন
‘পুজোয় ফিরে আসুন’ মমতার আহ্বান, তীব্র সমালোচনায় সরব আন্দোলনকারী থেকে বিরোধীরা