কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এলাকায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ম্যানহোলে পড়ে তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। টানা চার ঘণ্টার উদ্ধারকার্যের পর রবিবার দুপুরে তিনজনকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মৃতদের নাম ফরজ়েম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার। তাঁদের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকালে সেক্টর ৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অধীনে রাসায়নিক বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ চলছিল। হঠাৎ পাইপলাইন ফেটে যাওয়ায় তিন শ্রমিক একে একে গভীর ম্যানহোলে পড়ে যান।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশ, দমকল বাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল। দড়ি বেঁধে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়, কিন্তু ততক্ষণে তাঁদের আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি এলাকা পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি বলেন, “দোষী যেই হোক, শাস্তি পেতেই হবে। কেএমডিএ এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এরপরে এমন ঘটনা ঘটবে না।”
নিরাপত্তার ঘাটতি? উঠছে প্রশ্ন
সাধারণত বড় নিকাশি নালার ক্ষেত্রে যন্ত্রের মাধ্যমে সাফাই করা হয়, অথচ এখানে ম্যানহোলে নামিয়ে কাজ করানো হচ্ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ম্যানহোলে নামার আগে বিষাক্ত গ্যাস পরীক্ষা করা, সুরক্ষা সরঞ্জাম থাকা, অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অভিযোগ, এসবের কিছুই মানা হয়নি।
২০১৩ সালে দেশে ম্যানহোল পরিষ্কার করার জন্য মানব শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই কাজ করানো হচ্ছে, যার পরিণতি একের পর এক মৃত্যু।
এই ঘটনা ফের একবার প্রশাসনের ভূমিকা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল। মৃত্যুর দায় ঠিকাদার সংস্থা না কি প্রশাসনের, সেটাই এখন তদন্তের বিষয়।