শেয়ার বাজারে লগ্নির টোপ দিয়ে প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ল একটি চক্র। চক্রের মূল পান্ডা হিসেবে ধরা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ তিনজন। অভিযুক্তদের রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে, তাদের জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী। বিচারক অভিযুক্তদের ১৫ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তদের পরিচয়
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিনজনের নাম গঙ্গারাম সাউ, সৃষ্টি মণ্ডল এবং অমিত সরকার। শেক্সপিয়র সরণি এলাকার জওহরলাল নেহরু রোডে তারা অফিস খোলে। এছাড়াও আরও দু’টি ভুয়া ঠিকানায়ও অফিস খোলে তারা। গঙ্গারাম তার নিজের রাউটার ব্যবহার করে বহু ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠায়। এভাবেই তারা অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা কর্মকর্তাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।
প্রতারণার কৌশল
প্রতারণার কৌশল হিসেবে তারা হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলে শেয়ার বাজারে লগ্নির টোপ দেয়। প্রোমোশনাল ভিডিও পাঠিয়ে লাইক দিতে বলে এবং বিনিময়ে কিছু টাকাও দেয়। এতে প্রলুব্ধ হয়ে অবসরপ্রাপ্ত মহিলা নৌসেনা কর্তা লগ্নি শুরু করেন। তিনি টাকা ফেরত চাইলে আরও টাকা লগ্নি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এভাবে তিনি ৩৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাঠানোর পর সন্দেহ হলে, লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
নতুন টেলিকম আইন কী ভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপ ব্যবহারের পদ্ধতিতে প্রভাব ফেলবে
তদন্তের অগ্রগতি
গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে যে, জালিয়াতির টাকা ১১টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরানো হয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলির ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়ে কয়েকটি মোবাইল নম্বরের হদিশ পান গোয়েন্দারা। এভাবে পুলিশের হাতে আসে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ পাঠরত ছাত্রী সৃষ্টি মণ্ডল, যিনি মূলত এই অ্যাকাউন্টগুলি পরিচালনা করতেন।
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার
পুলিশ শেক্সপিয়র সরণির অফিসে হানা দিয়ে ৪০টি ভুয়ো সিমকার্ড, টাকা গোণার যন্ত্র, প্রচুর এটিএম কার্ড এবং একাধিক মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। অভিযোগকারিণী ছাড়াও আরও কতজনের কাছ থেকে তারা টাকা হাতিয়েছে, তা জানতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার পর লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং শেয়ার বাজারে লগ্নি করার আগে ভালোভাবে যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছে।