দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনিতে ‘শুভ অ্যাপার্টমেন্ট’ নামে একটি চারতলা ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত, ওই বাড়িতে আপাতত কোনও বাসিন্দা না থাকায় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, কলকাতা পুরসভার আবাসন বিভাগের আধিকারিক এবং স্থানীয় প্রশাসনিক প্রতিনিধিরা।
১৭ ডিসেম্বর থেকেই ফ্ল্যাটটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়। সেই কারণে বাসিন্দারা পাশের বাড়িতে চলে যান। মঙ্গলবার সকালে ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়ার পর বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। শিউলি বক্সী নামে এক বাসিন্দা জানান, ফ্ল্যাট থেকে বিকট আওয়াজ শোনার পর তাঁরা গিয়ে দেখেন পুরো বাড়ি হেলে গিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনতলা বাড়ি তৈরির অনুমতি থাকা সত্ত্বেও নিয়ম ভেঙে চারতলা বাড়ি তৈরি করা হয়। বিধানসভার যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার বলেন, “পুরসভার নিয়ম মেনে কাজ হয়নি। বাড়িটি ১০-১২ বছরের পুরনো এবং জলা জমি ভরাট করে তৈরি হয়েছিল।” একই কথা জানিয়েছেন ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাড়ি লিফ্টিংয়ের কাজের জন্য হরিয়ানার একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে এই ধরনের কাজের জন্য অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হয়নি। মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এই বাড়িটি পুরোপুরি ভেঙে দেওয়া হবে এবং প্রোমোটারকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।”
পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, নির্মাণে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রুখতে নির্মাণ প্রক্রিয়া আরও কড়াভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত জানান, পুরো এলাকাটি গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। অনুমতি ছাড়া লিফ্টিংয়ের কাজ কীভাবে চলছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
বাঘাযতীনের এই ঘটনা ফের একবার শহরের নির্মাণ প্রক্রিয়ায় নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শহরের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণের নিয়মকানুন আরও কঠোরভাবে কার্যকর করা জরুরি।