কলকাতা: রাজ্যপাল বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন অভিযোগকারী মহিলা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন তিনি।
গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানীর’ গুরুতর অভিযোগ ওঠে। রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী দাবি করেন, রাজ্যপাল বোস তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন। প্রথমে রাজভবনে থাকা পুলিশের কাছে এবং পরে থানায় গিয়ে এই অভিযোগ জানান তিনি।
তবে সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকার কারণে কলকাতা পুলিশ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেনি। অভিযোগ নিয়ে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যায়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করে।
মহিলাকে পুলিশের দ্বারস্থ হতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজভবনের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্ট সেই তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি করায় তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়।
‘১০ বার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেছিল কংগ্রেস,’ বিরোধীশূন্য রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর মণিপুর তোপ
রাজ্যপালের বোসের মেয়াদ নিয়ে জল্পনা
প্রশাসনিক মহলে রাজ্যপাল বোসের দিন ফুরিয়ে আসছে বলে জল্পনা চলছে। সূত্রের মতে, রাজ্যপালের পদে থাকাকালীন তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ নিয়ে বিতর্ক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নজরে এসেছে। রাজ্য সরকারের কাজকর্ম নিয়ে যখনই কঠোর ভূমিকা নিতে যাচ্ছেন রাজ্যপাল, তখনই শাসক দল তাঁর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছে।
প্রশাসনিক অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্যপালের পদে পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বোস যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে নতুন রাজ্যপাল কে হতে পারেন, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। রাজ্যপাল পদ ধরে রাখতে বোসের পক্ষ থেকেও চেষ্টা চলছে বলে সূত্রের খবর।
প্রাক্তন আইএএস বোস ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বাংলায় এসেছিলেন। পরে তাঁকে রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হয়। শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করলেও, প্রধান বিরোধী দল বিজেপি তাতে অসন্তুষ্ট ছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে বোসের সংঘাত শুরু হয়। প্রশাসনিক সূত্রের মতে, শাসক ও বিরোধী কোনও পক্ষই রাজ্যপালের ভূমিকা পছন্দ করছে না, ফলে সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কাটাতে রাজ্যপাল পরিবর্তনের ভাবনা চলছে।