আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচারের দাবিতে বুধবার রাতে পথে নেমে ছিলেন সাধারণ মানুষ। আরজি কর হাসপাতালের সামনে সেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা। এছাড়া হাজির ছিলেন তাঁরা কাকা ও কাকিমা। এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তাঁরা।
বিশেষ করে, নির্যাতিতার বাবা বেশ কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেন, যা গোটা ঘটনার তদন্তে নতুন দিক উন্মোচন করেছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘হাসপাতালের তরফে কী ভাবে বলা হল যে, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে? সেই দিন মেয়ের মুখ দেখতে আমাদের সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ওর মা তাঁদের হাত-পা ধরেছিলেন, তবুও কোনও তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন ময়নাতদন্ত করতে এত দেরি হল? রাত পৌনে ১২টায় কেন এফআইআর দায়ের হল? প্রথমে পুলিশ কেন অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করল? আমাদের মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের এমন ভূমিকায় আমরা ক্ষুব্ধ।’’ তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে উঠে আসছে তদন্ত প্রক্রিয়ায় একাধিক অসঙ্গতি ও দেরির অভিযোগ। নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, ‘‘আমরা আমাদের মেয়ের দেহ রেখে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ৩০০-৪০০ পুলিশ টালা থানা ঘিরে রেখেছিল। আমরা বাধ্য হয়ে ফিরে যাই এবং দেহ দাহ করতে বাধ্য হই। শ্মশানের টাকাও আমাদের থেকে নেওয়া হয়নি।’’
তিনি আরও জানান, সে দিন তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তৎক্ষণাৎ পুলিশের মুখের উপর জবাব দেয় নির্যাতিতার পরিবার।
নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘আমি চাই, অপরাধীরাও আমার মতো ঘুমহীন হোক। যত দিন বিচার না পাচ্ছি, তত দিন আন্দোলন চলুক।’’ পরিবারের অন্য সদস্যরাও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নির্যাতিতার কাকা ও কাকিমা জানান, শ্মশান পর্যন্ত তাঁদের ঘিরে রেখেছিল প্রচুর পুলিশ, যেন তাঁরা কোনওভাবে সত্য প্রকাশ করতে না পারেন।
এদিন, আরজি করের বাইরে হাতে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বহু মহিলা। তাঁদের দাবি, যত দিন পর্যন্ত বিচার না হয়, এই আন্দোলন থামবে না।