চাকরি ফেরতের দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবস্থানে বসেছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। রাত গড়াতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাত ৮টা নাগাদ আচমকা পুলিশবাহিনী বাড়িয়ে এনে লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। পুলিশের এই বলপ্রয়োগে কেউ মাথায় আঘাত পান, কেউ পায়ে। অনেকেই রাস্তার উপর শুয়ে পড়লে তাঁদের টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া মেহবুব মণ্ডল ও চিন্ময় মণ্ডল জানান, তাঁরা কোনও নতুন নিয়োগপর্বে বসবেন না। তাঁরা আগের চাকরিই ফেরত চান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না আসা পর্যন্ত বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান চলবে বলেই জানান তাঁরা। কর্মচারীদের বেরোতে না দিলেও, খাবার পৌঁছতে দেওয়া হচ্ছিল বলেও জানান তাঁরা।
এই অবস্থানের জেরে বিকাশ ভবনের একাধিক কর্মী আটকে পড়েন। তাঁদের কেউ কেউ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ তাঁদের বার করে আনে। এদিন বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টাও করেন বিক্ষোভকারীরা বলে অভিযোগ। সেই সময় পুলিশ ভিতরে উপস্থিত ছিল না। বিকাশ ভবনের ভাঙা দরজা সবুজ দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়।
ঘটনাস্থলে যান বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়েন তিনিও। অনেকে তাঁর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ তাঁকে বার করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের কাছে কি আদৌ এই বিক্ষোভের পূর্বসূচনা ছিল? শাসকদলের অন্দরেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এর আগে কসবার ডিআই অফিসেও অনুরূপ বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল। এক পুলিশ আধিকারিকের লাথির ছবি ঘিরে সেই সময় তীব্র বিতর্ক হয়।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি-র মাধ্যমে নিযুক্ত ২৫,৭৩৫ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। মামলাটি এখনও বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ‘যোগ্য’ প্রার্থীরা আপাতত স্কুলে গিয়ে বেতন পাবেন। ছাত্রদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানায় আদালত। কিন্তু যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের মতে তাঁরা ‘যোগ্য’ হয়েও বিচার পেলেন না। সেই ক্ষোভ থেকেই রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা।