শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ছয় মাসের জন্য বরখাস্ত ১৮ জন বিজেপি বিধায়ক। শুক্রবার কর্নাটক বিধানসভার অধ্যক্ষ ইউ টি খাদার তাঁদের বরখাস্ত করেন।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হল, ওই বিধায়করা অধিবেশন চলাকালীন অধ্যক্ষের নির্দেশ অমান্য করে বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁরা স্পিকারের আসনে উঠে পড়েন, কাগজ ছোড়েন এবং অধিবেশনের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ দেখান। পরবর্তীতে, বিধানসভার মার্শালরা তাঁদের বাইরে নিয়ে যান।
বরখাস্ত হওয়া বিধায়কদের মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ দোড্ডানাগৌড়া এইচ পাতিল, অশ্বথ নারায়ণ সি এন, এস আর বিষ্ণুনাথ, বি এ বাসবরাজ, এম আর পাতিল, চন্নাবাসাপ্পা (চান্নি), বি সুরেশ গৌড়া, উমানাথ এ কোটিয়ান, শরণু সালাগার, শৈলেন্দ্র বেলদালে, সি কে রামামূর্তি, যশপাল এ সুবর্ত, বি পি হরিশ, ভারত শেঠি ওয়াই, মুনিরত্ন, বাসবরাজ মাট্টিমোড়, ধীরজ মুনিরাজু এবং চন্দ্রু লামানি।
অধ্যক্ষের আদেশ অনুযায়ী, বরখাস্ত হওয়া বিধায়কদের বিধানসভার হল, লবি এবং গ্যালারিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। তাঁরা কোনো স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় অংশ নিতে পারবেন না এবং তাঁদের নামে কোনো বিষয় বিধানসভার আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
সাসপেনশন চলাকালীন তাঁদের দেওয়া কোনো নির্দেশ কার্যকর হবে না এবং কমিটি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অনুমতি থাকবে না। এই সময়ে তাঁরা দৈনিক ভাতা থেকেও বঞ্চিত হবেন।
পুরোদিন জুড়ে কর্নাটক বিধানসভা উত্তপ্ত ছিল দুইটি প্রধান ইস্যুতে—হানিট্র্যাপ কেলেঙ্কারি এবং মুসলিমদের জন্য সরকারি চুক্তিতে চার শতাংশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিতর্কিত বিল অনুমোদন।
হানিট্র্যাপ বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন সমবায় মন্ত্রী কে এন রাজন্না দাবি করেন যে প্রায় ৪৮ জন রাজনীতিবিদ, যাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাঁরাও রয়েছেন, একটি সুপরিকল্পিত ব্ল্যাকমেল চক্রের শিকার হয়েছেন।
এই ইস্যুতে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার কেন্দ্রে ঢুকে বিভিন্ন সিডি হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া প্রতিশ্রুতি দেন যে সরকার এই বিষয়ে কারও রক্ষা কবচ হবে না এবং অভিযোগ দাখিল হলে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হবে।
এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই বিধানসভায় একটি অর্থ বিল পাশ হয়। কিন্তু বিজেপি বিধায়করা ভুলবশত এটি মুসলিম সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিল ভেবে বিলের অনুলিপি ছিঁড়ে ছুড়ে ফেলেন, যা আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।