দেশ
রাজ্যসভায় বিক্ষোভ, নাটকীয়তার মধ্যেই পাশ হল দু’টি কৃষি বিল!
কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার সংক্রান্ত বিলগুলির উপর ধ্বনি ভোট নেওয়া হয়।

নয়াদিল্লি: বিরোধীদের সম্মিলিত প্রতিবাদ, বিক্ষোভ এবং নাটকীয় ঘটনার মধ্যেই রবিবার রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল দু’টি কৃষি বিল।
এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় কৃষি এবং কৃষক কল্যাণমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর রাজ্যসভায় বিল দু’টি পেশ করেন। একটি ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং অন্যটি ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত বিল।
সকাল থেকেই বিরোধীদের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্যসভা। তবে বিরোধীদের বিক্ষোভের মধ্যেই ধ্বনি ভোটে জয় পেল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ।
বিরোধী দল কংগ্রেস দাবি করে, “কৃষকদের মৃত্যুর পরোয়ানা”য় স্বাক্ষর করবে না। বিরোধী দলগুলি সম্মিলিত ভাবে বিলগুলিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানায়। যদিও সেই দাবি আমল পায়নি।
তৃণমূল সাংসদ ডেকের ও’ব্রায়েন বলেন, “১৩-১৪টি বিরোধী দল প্রতিবাদ জানায়। তাদের কণ্ঠরোধ করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নিয়েছে বিজেপি। ওরা সংসদের সব নিয়মকে হত্যা করছে। জঘন্যতম হিসেবে এটা রাজ্যসভার ঐতিহাসিক একটা দিন। দেশের মানুষ যাতে সেই ঘটনা দেখতে না পারেন, তাই রাজ্যসভা টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওরা রাজ্যসভা টিভিকেও সেনসর করছে”।
বিরোধীরা ওয়েলে নেমে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। হট্টগোলের সৃষ্টি হয় রাজ্যসভায়। এর পরই বাধ্য হয়ে অধিবেশন ১০ মিনিটের জন্য মুলতুবি রাখা হয়। তার পর রাজ্যসভা ফের চালু হতেই কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার সংক্রান্ত বিলগুলির উপর ধ্বনি ভোট নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, কৃষক এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিবাদের মধ্যেই লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সংশোধনী’, ‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত তিনটি বিল।
বিলগুলি নিয়ে দেশের একাধিক রাজ্যের কৃষকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই বিলকে হাতিয়ার করেই ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ছেঁটে ফেলা হবে। তবে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তরফে সেই অভিযোগ নস্যাৎ করা হয়েছে।
বিলগুলি পাশ হওয়ার পর এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ভারতীয় কৃষিক্ষেত্রের ইতিহাসে এক চরম সন্ধিক্ষণ। এই বিল পাশের জন্য দেশের কৃষকদের অভিনন্দন। এই বিল কৃষিক্ষেত্রের ভোল আমূল বদলে দেবে। কোটি কোটি কৃষকের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে”।
দেশ
বয়স মেপে চলছে টিকাকরণ, কেন্দ্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইল হাইকোর্ট
“অন্য দেশকে সাহায্য করার জন্য ভ্যাকসিন দিচ্ছি বা তাদের কাছে বিক্রি করছি এবং আমাদের নিজেদের লোককে তা দিচ্ছি না”, বলল হাইকোর্ট।

খবর অনলাইন ডেস্ক: বর্তমানে ৬০ বছরের বেশি অথবা কো-মর্বিডিটি রয়েছে, এমন ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের করোনা টিকাকরণ চলছে। ঠিক কী কারণে এই কঠোর নিয়ন্ত্রণ, কেন্দ্রের কাছে তারই ব্যাখ্যা চাইল দিল্লি হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বলে, সেরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেক যথাক্রমে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন নামে দু’টি কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ভ্যাকসিন জোগান দেওয়ার জন্য আরও ক্ষমতা রয়েছে তবে মনে হয় তাদের সম্পূর্ণ ক্ষমতা কাজে লাগানো হচ্ছে না।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি বিপিন সঙ্গী এবং রেখা পল্লির বেঞ্চ বলে, “আমরা এটাকে পুরোপুরি ভাবে ব্যবহার করছি না। আমরা হয় তা বিশ্বের অন্য দেশকে সাহায্য করার জন্য দিচ্ছি বা তাদের কাছে বিক্রি করছি এবং আমাদের নিজেদের লোককে ভ্যাকসিন দিচ্ছি না। সুতরাং আমাদের সেই দায়িত্ব ও জরুরি বোধ থাকতে হবে”।
একই সঙ্গে তাঁরা উৎপাদন বৃদ্ধির দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “ভারত সরকার টিকাকরণের শৃঙ্খলা বিশেষ করে দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় ভ্যাকসিনগুলি পরিবহণের সক্ষমতা প্রকাশ করে একটি হলফনামা দাখিল করবে। বর্তমানে গৃহীত ব্যবস্থারও নির্দেশ করবে”।
উচ্চ আদালত আরও বলে “টিকাকরণের জন্য বয়সের ভিত্তিতে শ্রেণি বিভাগ করা হয়েছে। এই কঠোর নিয়ন্ত্রণ রাখার পিছনে যুক্তিটি ব্যাখ্যা করবে ভারত সরকার”।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে সময়সীমা বেঁধে দেয় আদালত। জানানো হয়, আগামী ৯ মার্চের মধ্যে হলফনামা দাখিল করতে হবে। সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলাটির শুনানি হবে আগামী ১০ মার্চ।
আরও পড়তে পারেন: ‘পর্ন দেখানো হয়, নিয়ন্ত্রণ দরকার’, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম প্রসঙ্গে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
দেশ
ওড়িশার সিমিলিপাল টাইগার রিজার্ভে এক সপ্তাহ পরেও জ্বলছে আগুন, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
প্রায় এক সপ্তাহ আগে আগুন লাগে। রাজকন্যার টুইটের পরে প্রশাসনিক পদক্ষেপ!

খবর অনলাইন ডেস্ক: প্রায় এক সপ্তাহ আগে আগুন লাগে ওড়িশার সিমিলিপাল ফরেস্ট রিজার্ভে। যে আগুন এখন জ্বলে চলেছে। সমালোচনায় সরব হয় বিভিন্ন মহল। এর পরই রাজ্য প্রশাসন আগুন নেভানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে বুধবার একটি উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি সিমিলিপাল বনাঞ্চলকে বিশ্বের মূল্যবান সম্পদ হিসাবে বর্ণনা করে সরকারি আধিকারিকদের বনের সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে এবং বনের আগুনের ঘটনা এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন।
বন্য প্রাণীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু!
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিমিলিপাল ফরেস্ট রিজার্ভ ২,৭৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। আগুনের বীভৎস শিখাগুলি এক অংশ থেকে অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার পর্যন্ত সিমিলিপাল বন বিভাগের মোট ২১টি রেঞ্জের মধ্যে আটটিতে জ্বলতে দেখা যায় আগুনের শিখা। এতে বন্য প্রাণীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু হয়েছে।
রাজকন্যার টুইটের পরে প্রশাসনিক পদক্ষেপ
ময়ূরভঞ্জের রাজপরিবারের রাজকন্যা অক্ষিতা এম ভঞ্জদেও সিমিলিপাল আগুন নিয়ে টুইট করেছিলেন। জানা যায়, তার পরেই ওড়িশা প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং মোকাবিলার পদক্ষেপ করেছিল।
গত ১ মার্চ টুইট করেছিলেন অক্ষিতা। তিনি লেখেন, “ময়ূরভঞ্জে গত সপ্তাহে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহ আগে ৫০ কেজির মতো গজদন্ত দেখা গিয়েছিল। কয়েক মাস আগেই সিমলিপালের স্থানীয় যুবকরা বালি ও কাঠের মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। রাজ্যের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ছাড়া, কোনো জাতীয় সংবাদমাধ্যম এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বায়োস্ফিয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর করছে না”।
তার এই টুইটের পরে পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী প্রকাশ জাভাড়েকর এই বিষয়টিতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আগুন নেভাতে রাজ্য প্রশাসন দল পাঠায়।
আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে, দাবি প্রশাসনের
ওড়িশার বন ও পরিবেশ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মোনা শর্মা জানিয়েছেন, সিমলিপালের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকেও তিনি অংশ নেন। তিনি বলেন, বনের আগুনে কোনো প্রাণহানি হয়নি।
আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) জারি করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেছেন, বড়ো গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের (ডিএফও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন রাজ্য সরকার এবং জেলাশাসকদের অগ্নিকাণ্ডের সতর্কতার বিষয়ে অবহিত করেন।
সিমিলিপালে বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আড়াইশো ফরেস্ট গার্ড-সহ এক হাজারের মতো কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। এ ছাড়াও, আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪০টি দমকল এবং ২৪০ ব্লোয়ার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের এক আধিকারিক।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
দেশ
কেরলে ‘মেট্রোম্যান’কে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বেছে নিল বিজেপি
কেরল ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করল বিজেপি!

খবর অনলাইন ডেস্ক: কেরল বিধানসভা নির্বাচনে ‘মেট্রোম্যান’ হিসাবে পরিচিত ই শ্রীধরনকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বেছে নিল বিজেপি।
কেরল বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন দলের একটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “দল শীঘ্রই অন্যান্য প্রার্থীদের একটি তালিকাও প্রকাশ করবে”।
কেরলে জনপ্রিয় আমলা ই শ্রীধরনের গেরুয়া শিবিরে প্রবেশ বিজেপিকে যথেষ্ট শক্তিশালী করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
৮৮ বছর বয়সি ই শ্রীধরন সংবাদমাধ্যমের কাছে আগেই জানিয়েছেন তিনি বিজেপিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এক দিনে বিজেপিতে যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত নেননি, তিনি রাজ্যের জন্য কাজ করতে চান।তাঁর কথায়, “কেরলে বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি যদি চায়, তা হলে আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে রাজি। আমি মুখ্যমন্ত্রী না হলে যে যে কাজ করতে চাইছি, সেগুলির উপর গুরুত্ব দিতে পারব না। আমি রাজ্যপাল হতে চাই না। কারণ, সেটা পুরোপুরি সাংবিধানিক পদ। কোনো ক্ষমতাই নেই”।
বুধবারই পুনর্গঠিত পালারিভট্টম ফ্লাইওভার-এর চূড়ান্ত পরিদর্শনে এসেছিলেন ই শ্রীধরণ। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবারই শেষবার দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের ইউনিফর্ম পরবেন। ডিএমআরসি থেকে পদত্যাগ করেই তিনি বিধানসভা নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
১৯৩২ সালের ১২ জুন কেরলের পালাক্কড়ে জন্ম শ্রীধরনের। অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ার সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। এর পরে ভারতীয় রেলে যোগ দেন। একে একে দিল্লি মেট্রো, কোচি মেট্রো, লখনউ মেট্রোয় কাজ করেছেন তিনি।
নিজের জয় এবং কেরলে বিজেপির ক্ষমতা দখলে আত্মবিশ্বাসী শ্রীধরন বলেছেন, “আমি যে কোনও কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়াই করতে রাজি। তবে আমি এখন যেখানে আছি, সেই মলপ্পুরমের পোন্নানি থেকে বেশি দূরে কোনও কেন্দ্র না হলেই ভালো হয়”।
আরও পড়তে পারেন: রাজ্যের ৯৭ বিধায়ক কোটিপতি, ধনীর তালিকায় প্রথম তিন শাসক দলের