ওয়েবডেস্ক: তাজমহলের বিতর্কের মধ্যেই আরও এক মুসলিম শাসককে নিয়ে বিতর্ক বাঁধিয়ে দিল বিজেপি। ১০ নভেম্বর টিপু সুলতানের জন্মদিন। তার আগেই বিতর্ক তৈরি করে কর্নাটকের বিজেপি নেতা অনন্ত কুমার হেগড়ে বলেছেন, “টিপুর মতো এক ধর্ষক এবং গণহত্যাকারীর জন্মদিন পালন করা উচিত নয়।”
কিন্তু সত্যিই কি ধর্ষক এবং গণহত্যাকারী ছিলেন টিপুর? তাঁর জীবনের ব্যাপারে গভীরে পড়লে আমরা কিন্তু ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথাই জানতে পারি। আসুন এক বার দেখে নিই টিপুর জীবন নিয়ে কয়েকটি অজানা বা অল্প জানা তথ্য।
১) নিজের সময়ে টিপু সুলতান ছিলেন ব্রিটিশদের কাছে সব থেকে ভয়ংকর ভারতীয়। ব্রিটিশ শাসকরা টিপুকে সব থেকে বেশি ভয় পেত। তাঁর মৃত্যুর পরে ব্রিটেনে ধুমধাম করে উৎসব পালন হয়। বিভিন্ন শিল্পকলার মাধ্যমে ব্রিটেনে তাঁর মৃত্যু স্মরণীয় করে রেখেছিলেন ব্রিটিশ লেখক, নাট্যকর্মী এবং চিত্রশিল্পীরা।
২) ব্রিটিশ শাসকরা ভারতের কত বড়ো শুত্রু সেটা টিপুই প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন। ব্রিটিশদের ভারত থেকে তাড়ানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে অন্তত চারটে যুদ্ধ লড়েছিলেন তিনি। সেই অর্থে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন উপমহাদেশের প্রথম স্বাধনীতাসংগ্রামী।
৩) ব্রিটিশদের তাড়ানোতে সাহায্য করার জন্য অটোমান এবং ফরাসি শাসকদের কাছে নিজের দূত পাঠিয়েছিলেন টিপু।
৪) পশ্চিমী পড়াশোনায় নিজেকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন টিপু। সেই জন্য সুদুর ফ্রান্স থেকে বন্দুক তৈরির বিশারদ এবং আরও ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে এসেছিলেন তিনি। ‘মেক ইন মাইসোর’ নীতিতে কামান তৈরির কারখানা এবং অস্ত্রভাণ্ডার তৈরি করেছিলেন টিপু।
৫) টিপু সুলতান ছিলেন ভারতেরই ভূমিপুত্র, কোনো অনুপ্রবেশকারী নয়।
৬) টিপুর মুখ্যমন্ত্রী পুর্নাইয়া ছিলেন একজন হিন্দু। শুধু তিনিই নয়, টিপুর অসংখ্য সভাসদ ছিলেন হিন্দু।
৭) তাঁর সময়ে অনেক মন্দিরের পুনর্গঠনের কাজ করেছেন টিপু। অনেক মন্দিরের পৃষ্টপোষকও ছিলেন টিপুই। যার মধ্যে অন্যতম তাঁর রাজধানী শ্রীরঙ্গপত্তনমের শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দির। এ ছাড়াও শৃঙ্গেরি মঠের স্বামীজিকে জগদগুরু বলে সম্বোধন করতেন তিনি।