উৎসবের মরশুমে আম জনতার হেঁশেলে আগুন। সবজি, ফলমূল, দুধ, দই, ডিম, পনির, মাছ, মাংসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামছাড়া দামবৃদ্ধির কারণে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত, ডাল, রুটি, সবজি দিয়েই পেঠ ভরে আম দেশবাসীর। সেখানে উৎসবের মরশুমে সাধারণ নিরামিষ খাবারের খরচ এতই লাগামছাড়া যে সংসার চালাতে হিমশিম দশা গৃহস্থর।
সেপ্টেম্বরে নিরামিষ খাবারের খরচ গত বছরের তুলনায় ১১% বেড়েছিল। আমিষ খাবারের খরচ কমেছিল ২%। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছিল ক্রিসিল (CRISIL, Credit Rating Information Services of India Limited) রিপোর্টে। আনাজপাতির চড়া দামের কারণে সেপ্টেম্বরে সার্বিক ভাবে নিরামিষ খাবারের খরচ ৩৭% বেড়েছে বলে দাবি করা হয় ক্রিসিল মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স (CRISIK MI&A) গবেষণা রিপোর্টে।
সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবরে দুর্গাপুজোর মরশুমে সাধারণ গৃহস্থ আশা করেছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হয়তো কিছুটা কমবে। কিন্তু কোথায় কী! সবজির দাম এতই লাগামছাড়া যে সাধারণ ডাল, ভাত, রুটি, সবজির তরকারি করতেই হিমশিম দশা গৃহস্থর। উৎসবের মরশুমে মুদ্রাস্ফীতি নিরামিষ খাবারের খরচ বাড়িয়ে তুলেছে।
ক্রিসিল রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর অক্টোবরে নিরামিষ খাবারের খরচ ২০% বেড়েছে। গত বছর এ সময় নিরামিষ খাবারের গড় খরচ ছিল ৩১.৩ টাকা। সেটা এ বছর বেড়ে হয়েছে ৩৩.৩ টাকা। আলু, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। অক্টোবরে টমেটো ও ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে।
গত বছরের তুলনায় অক্টোবরে টমেটোর দাম কেজিপ্রতি ৬৪ টাকা বেড়েছে। মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশে ভারী বৃষ্টিতে মার খেয়েছে টমেটোর চাষ। নিরামিষ খাবার হয় মূলত ডাল, সবজি দিয়ে। এ সবের চড়া দামের সরাসরি প্রভাব নিরামিষ খাবারের খরচের ওপর পড়েছে।
ক্রিসিল রিপোর্টে বলা হয়েছে, ডালের দাম ১১% বেড়েছে অক্টোবরে। নিরামিষ খাবারের ৯% হল ডাল। অন্য দিকে, গত বছরের তুলনায় সেপ্টেম্বরের মতোই অক্টোবরেও আমিষ খাবারের খরচ কমেছে। গত বছরের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৩% কমেছিল। অক্টোবরেও ব্রয়লার মুরগির দাম ৯% কমেছে। আমিষ খাবারের ৫০% মুরগির মাংস। তাই ব্রয়লার মুরগির দাম কমায় সার্বিক ভাবে আমিষ খাবারের খরচ কমেছে।
ক্রিসিল রিপোর্ট যা-ই বলুক, সাধারণ মানুষ তাঁদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা থেকে দেখতে পাচ্ছেন, নভেম্বরেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দাম কমার কোনও লক্ষণ নেই।