বেঙ্গালুরুতে এক প্রযুক্তি চাকুরিজীবীর আত্মহত্যার ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন। এরই মধ্যে দিল্লিতেও একই ধরনের একটি ঘটনা ফের নতুন করে প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাক্তন স্ত্রীর দায়ের করা ধর্ষণ ও পণ দাবির মামলাকে মিথ্যা বলে অভিহিত করে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক ব্যক্তি।
যমুনা বিহারের বাসিন্দা অরবিন্দ ভারতী ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে সারিতা বিহার থানায় একটি চিঠি লিখে জমা দেন। যেখানে তিনি দাবি করেন যে, তাঁর স্ত্রী রিচা তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন এবং তাঁদের হয়রানি করেছেন। অরবিন্দ তাঁর মৃত্যুর জন্য রিচাকে দায়ী করেন এবং পুলিশ প্রশাসনের উপর তাঁর বিশ্বাসহীনতার কথাও জানান।
আত্মহত্যার আগে চিঠিতে কী লেখা ছিল?
ছয় পাতার সুইসাইড নোটে অরবিন্দ ভারতী লেখেন, ২০০৮ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের থেকেই তাঁর ও তাঁর পরিবারের প্রতি রিচার আচরণ বদলে যায়। তিনি জানান, রিচা তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ এনেছিলেন, যার ফলে তাঁরা শুধুমাত্র কয়েকদিনের জন্য একসঙ্গে ছিলেন।
২০১৩ সালে দিল্লি আদালত ওই মামলায় অরবিন্দকে নির্দোষ ঘোষণা করে। কিন্তু ২০১৬ সালে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের পরও হেনস্থা বন্ধ হয়নি। অরবিন্দের অফিস ও কোচিং সেন্টারে যাতায়াত করতেন রিচা। একাধিক বার সর্বসমক্ষে স্ত্রীর কাছে অপমানিত হতে হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন অরবিন্দ।
অরবিন্দ অভিযোগ করেন, রিচা মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। এক বার পুলিশ তাঁকে হেনস্থা করে রিচার বাড়িতে পাঠায়, যেখানে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে জল বা খাবার না দিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখেন।
অরবিন্দ সুইসাইড নোটে আরও লেখেন যে, রিচা তাঁর কাছে টাকা দাবি করে চাপ দিতেন। শুধু তাই নয়, একবার তাঁর অফিসের ল্যাপটপ, ওয়ালেট, বাইকের কাগজপত্র এবং ৩২ লক্ষ টাকার চেক-সহ একটি ব্যাগ নিয়ে চলে যান রিচা।
শেষ বার্তা
চিঠির শেষে অরবিন্দ লেখেন, “আমি শেষবারের মতো রিচার কথা মনে করছি এবং নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি। না হলে প্রতিদিন এ ভাবেই মরতে হবে।”
এই ঘটনার পর রিচাকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। অরবিন্দের এই করুণ মৃত্যুর ঘটনা আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। বেঙ্গালুরু যুবকের আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্রে করে মিথ্যা মামলার অপব্যবহার এবং তার ফলস্বরূপ তৈরি হওয়া মানসিক চাপের বিষয় নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে সাত বছর আগের ঘটনাটি ফের চর্চায়।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরু ইঞ্জিনিয়ার আত্মহত্যা: ন্যায়বিচার, কঠোর ব্যবস্থার দাবি পরিবারের