দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের চমকে দেওয়া হার শুধু আম আদমি পার্টির (আপ) জন্যই নয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ভিতরেও এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। কেজরিওয়ালের হার রাহুল গান্ধীর জন্য নেতৃত্ব পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি করে দিল বলেই মনে করছেন একাংশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
বিজেপি দিল্লির ৭০টির মধ্যে ৪৭টি আসনে এগিয়ে থাকায় আপ-এর এক দশকের আধিপত্য প্রায় ভেঙে পড়েছে। কেজরিওয়াল নিজেও নয়াদিল্লি আসনে বিজেপির প্রবেশ বর্মার কাছে প্রায় ৩,০০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে টানা এই আসন ধরে রাখা কেজরিওয়ালের জন্য এটি বিশাল ধাক্কা।
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র একাধিক শীর্ষ নেতা—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরেরা এই নির্বাচনে কেজরিওয়ালকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিলেন। ফলে কংগ্রেস কার্যত দিল্লির লড়াইয়ে পৃথক অবস্থানে সরে গিয়েছিল। কিন্তু এখন কেজরিওয়ালের পরাজয়ের পর জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে নতুন করে রাহুল গান্ধীর নাম সামনে উঠে আসছে।
জোটের ভেতরে নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চাপানউতোর চলছে। তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতৃত্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে জোরাল দাবি করে বলেছেন, “বিরোধীদের নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে একত্রিত হওয়া উচিত। কংগ্রেসকে অহং বিসর্জন দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতা হিসেবে মেনে নেওয়া উচিত।”
তবে কেজরিওয়ালের এই পরাজয়ের পর, পাল্টা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বের পক্ষে সমর্থন বাড়তে পারে। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ইতিমধ্যেই কংগ্রেসকে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে আত্মবিশ্লেষণের পরামর্শ দিয়েছেন।
আপ-এর এই পতন পঞ্জাব, গুজরাত-সহ অন্যান্য রাজ্যেও দলটির প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে, যা কংগ্রেসকে শক্তিশালী করবে। শরদ পাওয়ার, লালুপ্রসাদ যাদবের মতো নেতারাও এখন রাহুলের নেতৃত্বের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হতে পারেন।
সামগ্রিকভাবে, কেজরিওয়ালের এই পরাজয় বিরোধী শিবিরে এক নতুন সমীকরণ তৈরি করল, যেখানে রাহুল গান্ধী ফের বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দাবিদার হয়ে উঠতে পারেন।