অরূপ চক্রবর্তী, গুয়াহাটি: অসমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের করাল ছায়া। গত দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও একের পর এক ভূমিধ্বসে রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। গুয়াহাটি-সহ নিম্ন অসমের বহু জায়গা জলের তলায় চলে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক ও রেল পরিষেবা।
রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত বন্যা ও ভূমিধ্বসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮ জন। বিপর্যস্ত ১৫টিরও বেশি জেলার ৭৮ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা। ঘরছাড়া মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতিকে “গুরুতর” বলে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় জল কমিশন রাজ্যের জন্য ‘কমলা বুলেটিন’ জারি করেছে।
খারাপ আবহাওয়ার জেরে সড়ক ও রেল চলাচলও ব্যাহত। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়েছে, বরইগ্রাম-দুলাবছড়া রেলপথের ওপর দিয়ে জল বইছে। সেই কারণে বাতিল করা হয়েছে দুলাবছড়া-শিলচর যাত্রীবাহী ট্রেন। দুলাবছড়া-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুলাবছড়ার বদলে বরইগ্রাম থেকে ছাড়বে বলে জানানো হয়েছে।
কামরূপ জেলার ছয়গাঁও অঞ্চলে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি বড় অংশ ভেঙে পড়েছে জলের তোড়ে। পাশাপাশি, পার্শ্ববর্তী মেঘালয়ের পাহাড় থেকে প্রবাহিত জল নিম্ন অসমের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প পথ তৈরি করা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ব্রহ্মপুত্র ও বরাক-সহ ১০টি প্রধান নদী বিপদসীমার ওপরে বইছে। বিশেষত ডিব্রুগড় এবং যোরহাটের নিমাতীঘাট এলাকায় পরিস্থিতি বেশ সঙ্কটজনক।
বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ, দমকল ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবার বাহিনী। উদ্ধারকার্য চলছে জোরকদমে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে বহু মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।
পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেও। প্রশাসনের তরফে নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নদী সংলগ্ন এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।