অরূপ চক্রবর্তী
অসমে অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই ৩৩০ জন অবৈধ অভিবাসীকে রাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে সোমবার বিধানসভায় জানালেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এই পদক্ষেপ ‘ইমিগ্র্যান্টস এক্সপালশন ফ্রম আসাম অ্যাক্ট, ১৯৫০’ অনুযায়ী এবং ২০২৪ সালে নাগরিকত্ব আইন সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই রায়ের পর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের মধ্যস্থতা ছাড়াই জেলা শাসকরা বিদেশি সন্দেহভাজনদের সরাসরি চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা পেয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, ১৯৫০ সালের এক্সপালশন অ্যাক্ট এখনও কার্যকর এবং বৈধ।
প্রতিক্রিয়া ও প্রশ্নের উত্তর:
বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া প্রশ্ন তোলেন, ফেরত পাঠানো ওই অভিবাসীদের কেউ আবার ফিরে এসেছে কি না। মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, “একটিও ফিরে আসেনি। কিছু ক্ষেত্রে হাইকোর্টে মামলা থাকলেও আমরা কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিশ্চিত হয়েছি, কেউ ফিরে আসেনি।”
এনআরসি নিয়ে উদ্বেগ ও দাবি:
চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, এনআরসি তালিকায় প্রতারণামূলক নিবন্ধন ও নামের পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে।
তিনি কেন্দ্র ও সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ২০% এবং অন্যান্য জেলাগুলিতে ১০% নমুনা পুনঃযাচাইয়ের অনুমতি দেওয়া হোক।
শর্মা জানান, অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু)-ও এনআরসি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে।
ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ও এনআরসি সংযোগ:
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল কারও বিদেশি ঘোষণা করলে এনআরসি-তে নাম থাকা সত্ত্বেও তা বদলায় না। অতএব, এনআরসি-তে নাম থাকা মানেই ভারতীয় নাগরিকত্ব নিশ্চিত নয়।
সরাসরি ফেরত পাঠানোর সুযোগ:
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ডেপুটি কমিশনার কাউকে বিদেশি মনে করলে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে না গিয়েও তাঁকে ফেরত পাঠানো সম্ভব।”
এই অবস্থানে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য একটাই—জনগণের মধ্যে বিশ্বাস ফেরানো ও প্রকৃত ভারতীয়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।