ক্রমশ বেড়ে চলা ঋণের চাপে বিপর্যস্ত এক পরিবারের পাঁচ সদস্য বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে ফেলার ঘটনায় চাঞ্চল্য। বিহারের বাঁকা জেলায় ওই পরিবারের একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বাকি চার জন গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন। শনিবার ভোরে ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় পরিবারের প্রধান কানহাইয়া মাহাতো মারা গিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী গীতা দেবী এবং তিন সন্তান বর্তমানে ভগতপুরের মায়াগঞ্জ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ধার ও ঋণের চাপ এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কের এজেন্টদের লাগাতার হয়রানির কারণে তাঁরা এই চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন। অটোচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন কানহাইয়া মাহাতো। পরিবারের খরচ মেটাতে একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ক্রমাগত বাড়তে থাকা ঋণ এবং দারিদ্র্যের কারণে পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে ওঠে।
১৬ বছর বয়সি কন্যা সাবিতা কুমারী কান্নায় ভেঙে পড়ে জানিয়েছে, “মা-বাবা বলেছিলেন, আমরা এই লজ্জা নিয়ে বাঁচতে পারব না। তাঁরা বলেছিলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে যাব”।
পরিবারটি শনিবার রাত প্রায় ২টো নাগাদ সালফাস নামে একটি বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে নেয়। এই ট্যাবলেট সাধারণত কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে ৮ বছর বয়সি ছোট সন্তান রাকেশ কুমার ট্যাবলেট মুখে নেওয়ার পর তা ফেলে দেয়, ফলে সে বেঁচে যায়।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন কানহাইয়ার শ্যালিকা বীনা দেবী একজন আত্মীয়ের কাছ থেকে ফোন পান। তিনি দ্রুত তাঁদের সাহায্যে ছুটে যান। এরপর সবাইকে প্রথমে অমরপুর রেফারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চার জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভাগলপুরের মায়াগঞ্জ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
কানহাইয়া মাহাতো হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মারা যান। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি আবারও ঋণের ফাঁদে পড়া পরিবারের দুর্দশা ও ব্যাঙ্কের এজেন্টদের হয়রানির কুপ্রভাবকে সামনে নিয়ে এল।