শেষ দফার ভোটের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঘোষণা করল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুযায়ী শংসাপত্র বিলির স্থান ও সময়সূচি। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই তালিকায় উত্তর ভারতের হরিয়ানা এবং উত্তরাখণ্ডের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের নামও রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতরের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সিএএ সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি বুধবার থেকে সিএএ আইন অনুযায়ী শংসাপত্র বিলির কাজ শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের চতুর্থ দফার পরে গত ১৫ মে প্রথম বার ৩০০ জন সিএএ আবেদনকারীকে শংসাপত্র বিলি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভাল্লা স্বয়ং দিল্লিতে ১৪ জন আবেদনকারীর হাতে ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দিয়েছিলেন।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো দেশ থেকে যে সমস্ত অমুসলিম (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি) ধর্মীয় অত্যাচারের কারণে এ দেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন এবং অন্তত পাঁচ বছর ভারতে কাটিয়েছেন, তাঁরা নাগরিকত্বের শংসাপত্র পেতে সিএএ-তে আবেদন জানাতে পারেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে কেন্দ্র।
এ ছাড়া নাগরিকত্ব আইনের ব্যাখ্যায় যাঁরা ৫ নম্বরের অন্তর্ভুক্ত, তাঁদেরও আবেদনের কথা ভাবতে হতে পারে। ওই ৫ নম্বর ব্যাখ্যা বলছে, ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বর কিংবা তার পরে যাঁদের এ দেশে জন্ম, তাঁদের বাবা-মা দু’জনেই ভারতীয় হলে, তিনিও এ দেশের নাগরিক। কিন্তু বাবা-মায়ের মধ্যে অন্তত এক জন ভারতীয় নাগরিক না হলেই সন্তানের নাগরিকত্বও প্রশ্নের মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন। ‘ভারত-আফগানিস্তান ভাই ভাই, দু’জনে মিলে মারবে পাকিস্তানকে’, এক আফগানের ভিডিও ভাইরাল
সিএএ-র প্রথম ধাপের সফল বাস্তবায়ন
লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার আগে সিএএ অনুযায়ী নাগরিকত্বের শংসাপত্র বিলি শুরু করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার একটি বড় পদক্ষেপ নিল। এই পদক্ষেপে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, হরিয়ানা, এবং উত্তরাখণ্ডকে।
সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ ভোটারদের মন জয় করার একটি কৌশল হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে সরকারের দাবি, এটি একটি প্রয়োজনীয় এবং মানবিক উদ্যোগ, যা ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হওয়া মানুষদের সহায়তা করবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে মোদী সরকারের লক্ষ্য, যারা প্রকৃতপক্ষে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে এ দেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের একটি নিরাপদ এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করা।
সিএএ সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করার পর থেকে ইতিমধ্যেই বহু আবেদনকারীর হাতে নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে সিএএ আইন প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হতে শুরু করেছে দাবি সরকারের।