জম্মু বিমানবন্দরে ড্রোন হামলায় চিনা সংযোগ! প্রাথমিক তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

0
জম্মু বিমানবন্দরে বায়ুসেনার স্টেশন (ইনসেটে ড্রোন)। প্রতীকী ছবি

খবর অনলাইন ডেস্ক: জম্মু বিমানবন্দরে বায়ুসেনার স্টেশনে শনিবার রাতে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দু’টি আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। উচ্চ-নিরাপত্তার ওই বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছিল বিস্ফোরক বোঝাই একটি ড্রোন। সূত্রের খবর, সেই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে এলে চিনা সংযোগের তথ্য!

আইএসআই মারফত লস্করের হাতে ড্রোন!

তদন্তকারী সংস্থাগুলির ধারণা, এই হামলায় যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল, তা চিনে তৈরি। সাম্প্রতিককালে চিন বেশ কিছু ড্রোন দিয়েছিল পাকিস্তানকে। সেখান থেকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বাকে এই ড্রোন সরবরাহ করেছিল। হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা তদন্তও চলছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আনুষ্ঠানিক ভাবে জম্মু বিমানবন্দরে বায়ুসেনার স্টেশনে হামলার তদন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র কাছে হস্তান্তর করে। এনআইএ-র একটি বিশেষ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে এয়ারফোর্স স্টেশনের বাইরে সিসিটিভির ফুটেজ স্ক্যান করা শুরু করে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি সন্দেহ করছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা অবশ্যই বায়ুসেনার স্টেশনের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। এর পাশাপাশি তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ ব্যাপারে চিনা সংযোগেরও সন্দেহ করছে।

দাবি, পাকিস্তানকে ড্রোন দিয়েছে চিন

তদন্তে নিযুক্ত এক শীর্ষ আধিকারিক বলেছেন, চিন কিছুদিন আগে পাকিস্তানকে নিজের তৈরি ড্রোন দিয়েছে। প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে এই ড্রোন সরবরাহ করেছিল। ঘটনাস্থলে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে এ বিষয়ে ফরেনসিক তদন্তও করা হচ্ছে।

সূত্র উদ্ধৃত করে এবিপি লাইভ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে, এই ড্রোনগুলি নিয়ে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে তালিবানদের সম্পর্কের ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ ২০২০ সালে তালিবানরা ড্রোন দিয়ে আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছিল।

ওই আধিকারিক জানান, ড্রোনটি সীমান্ত পেরিয়ে এসেছিল না কি ভারতীয় সীমান্তে সঙ্গীদের সহায়তায় লস্কর জঙ্গিরা সেটা উড়িয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। তবে তদন্ত এখনও চলছে এবং কোনো সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সূত্রটি জানিয়েছে, এ ব্যাপারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্তও চলছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা মোকাবিলা করার জন্য কী যায় অথবা কী ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ড্রোন ব্যবহার একাধিক বার

jammu drone 2
[হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছাদ]

‌গত দু’বছর ধরে পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে উপত্যকায় অস্ত্রশস্ত্র ঢোকানোর জন্য ড্রোন ব্যবহার করার খবর একাধিক বার প্রকাশ্যে এসেছে। জঙ্গিদের সাহায্য করতে সীমান্তের ওপার থেকে ড্রোন উড়ে আসার সংখ্যাও বেড়েছে গত এক বছরে।

সেনা সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার তিন-তিনবার সাঞ্জওয়ান সেনাঘাঁটির উপর ড্রোন উড়তে দেখা যায়। প্রথমবার রাত ১টা ৮ মিনিটে, এর পর রাত ৩টে ৯ এবং শেষবার ভোর ৪টে ১৯ মিনিটে সন্দেহজনক ড্রোনকে চক্কর কাটতে দেখা যায়। মাথায় ছিল সাদা আলো।

তার আগে শনিবার রাতে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে জম্মু বিমানবন্দরে বায়ুসেনার স্টেশনে প্রথম বিস্ফোরণটি হয় মধ্যরাত ১.৩৭ মিনিটে, দ্বিতীয়টি হয় ১১.৪৩ মিনিটে। বিস্ফোরক পাঠানো হয়েছিল ওই সন্দেহজনক ড্রোনের মাধ্যমেই। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের ড্রোন উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল জম্মুর কালুচক মিলিটারি স্টেশন। আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন সেনা জওয়ানরা। তাঁরা ড্রোনটিকে লক্ষ্য করে ২০-২৫ রাউন্ড গুলি চালান।

আরও পড়তে পারেন: ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে প্রথম ড্রোন হামলা, জোড়া বিস্ফোরণ জম্মু বিমানবন্দরে

বিজ্ঞাপন