ওয়েবডেস্ক: মণিপুরে সরকার গঠনের দাবি জানাল কংগ্রেস। ‘অনাস্থা ভোটে’র দাবি নিয়ে রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লাহের (Najma Heptullah) সঙ্গে দেখা করলেন কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং (Okaram Ibobi Singh)।
এন বীরেন সিং সরকারের উপর থেকে ন’জন বিধায়ক সমর্থন তুলে নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার সরকার গঠনের দাবি জানাল কংগ্রেস। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সিং তাঁর হাতে একটি চিঠি তুলে দেন। তিনি দাবি করেন, টিএমসি, এনপিপি এবং নির্দল বিধায়করা কংগ্রেসকে সমর্থন জানাচ্ছে। এই দলগুলি সম্মিলিত ভাবে সেকুলার প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট (SPF) নামে একটি নতুন জোটের নেতৃত্বে মণিপুরে পরবর্তী সরকার গঠন করতে চায়।
একই সঙ্গে কংগ্রেসের ১২ বিধায়ক মণিপুর বিধানসভার সচিবকে নোটিশ দিয়ে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করেন। ওই নোটিশে বিজেপিকে সমর্থনকারী সাত কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। ওই সাত বিধায়ক কংগ্রেসে থাকাকালীন বিজেপিকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সমর্থন জানান। গত সপ্তাহে মণিপুর হাইকোর্ট ওই সাত বিধায়কের বিধানসভায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের উপরই তাঁদের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। অধ্যক্ষ প্রথমে ২২ জুন পর্যন্ত তাঁদের ‘যোগ্যতাহীনতা’র মেয়াদ নির্ধারণ করলেও পরে তা কমিয়ে ১৮ জুন পর্যন্ত করে দেন। সেই সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কংগ্রেস।
সংবিধানের ১৭৯ (সি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কংগ্রেস নেতা মেঘচাঁদ সিং ওই নোটিশে দাবি করেন, এ ব্যাপারে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা খর্ব হয়েছে।
নিজেদের দলের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সংকটে ফেলে তিন জন বিজেপি (BJP) বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরই মণিপুরে সংকটে পড়ে যায় গেরুয়া শিবির। ফলে ৬০ সদস্যের মণিপুর (Manipur) বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ২১ থেকে কমে হয়ে যায় ১৮। অন্য দিকে ন্যাশনালিস্ট পিপলস পার্টি (NPP)-র চারমন্ত্রী-সহ ছয় বিধায়ক বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ায় পরিস্থিতি একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে যায়।
বীরেন সিং সরকার থেকে এক ঝাঁক বিধায়কের পদত্যাগ ও সমর্থন প্রত্যাহার সরকারের স্থায়িত্বকে ভঙ্গুর করেছে, তাই নয়। আগামী শুক্রবার হতে চলা রাজ্যসভা ভোটে রাজ্যের একমাত্র আসনটি ধরে রাখার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হল বিজেপির।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের শ্যামকুমারের বিধায়কপদ বাতিল হয়ে যাওয়ায় মণিপুর বিধানসভায় এখন কার্যত সদস্য সংখ্যা ৫৯। যদি ঢুকতে না-পাওয়া বাকি ৭ বিধায়ককেও গণনার বাইরে রাখা হয়, তা হলে বিধানসভার কার্যকর সদস্যসংখ্যা দাঁড়ায় ৫২। সে ক্ষেত্রে সরকার গড়তে গেলে অন্তত ২৭ জনের সমর্থন দরকার। ও দিকে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা এখন ২০। সদ্য দলে যোগ দেওয়া ৩ বিজেপি বিধায়ক, ৪ এনপিপি বিধায়ক, ১ তৃণমূল বিধায়ক এবং একমাত্র নির্দল বিধায়কের সমর্থন ধরলে কংগ্রেস শিবিরে রয়েছেন ২৯ বিধায়ক।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।