সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের প্রশ্নের মুখে পড়ে, রাজ্য সরকারকে মহিলাদের রাতের শিফ্টে কাজ সংক্রান্ত বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তির কিছু অংশ মুছে ফেলল। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর মহিলাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর মধ্যে ছিল মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশন, যা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় এক আইনজীবী এই বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানতে চান, “মহিলারা কেন রাতে কাজ করতে পারবেন না?” তিনি আরও বলেন, “নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব, সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার মহিলাদেরও রয়েছে।” প্রধান বিচারপতি এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, “বিমান পরিষেবা থেকে সেনাবাহিনী—প্রায় সব ক্ষেত্রেই মহিলারা রাতে কাজ করেন। তা হলে, এই বিজ্ঞপ্তি কেন?”
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতকে আশ্বস্ত করেন, বিজ্ঞপ্তির পাঁচ ও ছয় নম্বর বিতর্কিত অংশটি মুছে ফেলা হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, মহিলাদের জন্য পৃথক বিশ্রামকক্ষ এবং নিরাপত্তার বিষয়ে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার মতো নতুন পদক্ষেপও নেওয়া হবে। প্রধান বিচারপতি আরও উল্লেখ করেন, মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা এবং সুযোগ নিশ্চিত করাই সরকারের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত।
মহিলাদের রাতের শিফটে কাজের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, রাজ্যকে সংশোধনের নির্দেশ
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আরজি করের আন্দোলনরত মহিলা চিকিৎসকেরা। জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার রিয়া বেরা বলেন, “আমরা যে সমান পড়াশোনা করেছি, তার জন্য আমাদের সমান সুযোগও প্রাপ্য। আমাদের খাঁচায় বন্দি পাখির মতো দেখা উচিত নয়।”
বিতর্কিত এই বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা বিভিন্ন মহলে শুরু হলেও, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে এই ইস্যুতে সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া গেছে।