নয়াদিল্লি: দেশের পূর্ব উপকূলে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় বৃহস্পতিবার প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বিমানবন্দর ও রেল পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে, পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকায় জারি হয়েছে সতর্কতা।
বৃহস্পতিবার ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় দানা আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এই ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১০০-১১০ কিমি। ১৯৯৯ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার যথেষ্ট সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ওড়িশা সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা আগেভাগেই ৫,০০০টির বেশি আশ্রয় শিবির স্থাপন করেছে, যেখানে বাসিন্দাদের নিরাপদে রাখা হয়েছে।
শিয়ালদহ। ছবি: রাজীব বসু
ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে, কিছু এলাকায় অতি ভারী বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যা ও ভূমিধসের সম্ভাবনাও রয়েছে। সমুদ্রে ঝুঁকি থাকায় মৎসজীবীদের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কলকাতা এবং ভুবনেশ্বর বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল প্রায় ৩০০ বিমান। ভারতীয় রেলওয়ে ৫০০টির বেশি ট্রেন বাতিল করেছে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতিল করা হচ্ছে প্রায় ৫৫০টি ট্রেন।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ওড়িশার প্রায় ৪ কোটি ২০ লক্ষ জনসংখ্যার প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যাঁরা সমুদ্র উপকূলে কাঁচা ঘরে বসবাস করেন তাঁদের জন্য এটি আরও বিপজ্জনক। তবে ১৯৯৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই শিক্ষার ফলে এখন ওড়িশা রাজ্য অনেক বেশি প্রস্তুত। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে ঝড় মোকাবিলার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি, দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা এবং দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম। একই ভাবে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও।
হাওড়া। ছবি: রাজীব বসু
বৃহস্পতিবার ভারতীয় নৌবাহিনী ও অন্যান্য উদ্ধারকারী দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঝড়ের কারণে জনজীবন যাতে সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার আবহাওয়া দফতর জানায়, শক্তি বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার উপকূলের দিকে আরও এগিয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এ দিন মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা মাঝে আছড়ে পড়তে পারে সেটি।