দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জন্য বড় ধাক্কা। অর্থপাচার মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করল দিল্লি হাইকোর্ট। বাতিল হওয়া আবগারি নীতি সংক্রান্ত এই মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) নিম্ন আদালতের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছিল।
হাইকোর্ট দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর তার আদেশ স্থগিত রাখে। এই মুহূর্তে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তিহার জেলেই থাকতে হবে। ইডির পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল (এএসজি) এস ভি রাজু আদালতে দাবি করেন যে, তিনি মামলাটি সঠিকভাবে উপস্থাপনের পুরো সুযোগ পাননি।
তিনি অভিযোগ করেন, “বিচারক কোন দলিল পড়ার সুযোগ না দিয়েই, এই আদেশ দিয়েছেন। এই রকম একটি বিকৃত আদেশ আর হতে পারে না। বিচারক দলিলগুলো ‘ভারি’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং সেগুলি পড়ার প্রয়োজন বোধ করেননি।”
রাজু আরও দাবি করেন, “যে বিচারক স্বীকার করেন যে তিনি দলিল পড়েননি এবং জামিন দিয়েছেন, এর থেকে বড় বিকৃতি আর কিছু হতে পারে না। শুধু এই ভিত্তিতেই এই আদেশ বাতিল হওয়া উচিত।” পিএমএলএ-এর সেকশন ৪৫ উল্লেখ করে রাজু আদালতকে জামিন আদেশ স্থগিত করার আবেদন জানান।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল
তিনি ট্রায়াল কোর্টের কার্যপ্রণালীতে কঠোর আপত্তি জানান এবং দাবি করেন যে আদালত ইডি’র দাখিল করা তথ্যগুলি গুরুত্ব দেয়নি। রাজু বলেন, “আমি স্তম্ভিত যে লিখিত নোট জমা দেওয়ার পরেও আদালত বলছে ইডি তার মামলা প্রমাণ করতে পারেনি। আপনি বিরুদ্ধে রায় দিতে পারেন, কিন্তু ভুল তথ্য দেবেন না।”
ইডির পক্ষে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে উপস্থাপিত প্রমাণের বিস্তারিত বর্ণনা করে এএসজি বলেন, “আমরা দেখিয়েছি যে তিনি ১০০ কোটি টাকা লেনদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবুও বিচারক বলেন কোনও সরাসরি প্রমাণ নেই। সরাসরি প্রমাণ হল বিবৃতির আকারে। এছাড়াও সহমত রয়েছে।”
হাইকোর্ট, জামিনের আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করার সময় বলে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইডির আবেদনের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করা হবে। বেঞ্চ ঘোষণা করে, “বিষয়টি পুরোপুরি শুনানি ও মূল্যায়ন না হওয়া পর্যন্ত ট্রায়াল কোর্টের জামিনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাবে না।”
এই রায়ের পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আপাতত তিহার জেলেই থাকবেন এবং মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। হাইকোর্টের চূড়ান্ত আদেশ কী হবে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।