গুজরাতের এক ৯০ বছরের বৃদ্ধ ১ কোটিরও বেশি টাকা খুইয়েছেন প্রতারকদের হাতে। প্রতারকরা সিবিআই আধিকারিক সেজে তাকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নামে এক ভুয়ো মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করে। তারা দাবি করেছিল, বৃদ্ধ মাদক পাচার এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত। কয়েক সপ্তাহ আগেই ৫৯ লক্ষ খুইয়েছেন নয়ডার এক মহিলা চিকিৎসক। ফোনে পর্নো ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। প্রতারকরা তাঁকে বলেছিল, টাকা না দিলে তাঁকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করা হবে।
এতো গেল নামমাত্র কয়েকটি উদাহরণ। ভারতে এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ডিজিটাল অ্যারেস্ট-এর নামে ফোন পাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। আর সেই ফাঁদে পা দিলেই খোয়াতে হচ্ছে নিজের কষ্টার্জিত টাকা। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট সম্পর্কে বিশেষ কয়েকটি বিষয়।
কী এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট?
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে “ডিজিটাল অ্যারেস্ট” নামে কোনও আইনগত ধারণা নেই। এটি একটি উচ্চতর সাইবার প্রতারণা, যেখানে প্রতারকরা আইনরক্ষক সেজে ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে।
সাইবার আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল অ্যারেস্ট হল এমন এক প্রতারণা যেখানে কাউকে মিথ্যা ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
কী ভাবে কাজ করে এই প্রতারণা?
ভুয়ো অভিযোগ: প্রতারকরা দাবি করে, আপনি অপরাধে জড়িত, যেমন মাদক বা অর্থ পাচার।
ভয় দেখানো: প্রতারকরা জেল বা বড়সড় জরিমানার ভয় দেখায়।
ভুয়ো প্রমাণ: ফেক আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, এমনকি ভুয়ো সরকারি অফিসের দৃশ্য তৈরি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করে।
অর্থ আদায়: ভুক্তভোগীকে “তদন্ত” বাবদ অর্থ স্থানান্তর করতে বাধ্য করে।
সতর্ক থাকার উপায়
নিজেদের নিজেকে আইনরক্ষক হিসাবে দাবি করা অচেনা ফোন কল বা ভিডিও কল এড়িয়ে চলুন।
কোনও অর্থ স্থানান্তর করার আগে সরকারি সংস্থার প্রকৃত ওয়েবসাইট থেকে তথ্য যাচাই করুন।
কোনও সন্দেহজনক দাবি শোনামাত্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ভুক্তভোগী হলে কী করবেন?
অর্থ স্থানান্তরের ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে জাতীয় সাইবার হেল্পলাইন ১৯৩০-এ ফোন করুন।
নিকটবর্তী সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ জানান।
সাইবার ক্রাইমের অফিসিয়াল পোর্টাল www.cybercrime.gov.in-এ সহায়তার জন্য আবেদন করুন।
সাইবার প্রতারণা রোধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতায় ১৪সি কাজ করছে। সাইবার অপরাধ থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকুন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিন।