গুজরাতের ভাবনগরের সিহোরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার তিন। শনিবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে, যখন চিকিৎসক জয়দীপসিং গোহিল জরুরি বিভাগে রোগী দেখার সময় রোগীর পরিবারের সদস্যদের চটি খুলে ভিতরে প্রবেশ করতে বলেন। এ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় এবং শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকের উপর শারীরিক হামলা হয়।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এক মহিলার মাথায় আঘাত লাগার পর চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন অভিযুক্তরা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, অভিযুক্ত হিরেন ডাঙার, ভাবদীপ ডাঙার এবং কৌশিক কুভাদিয়া মহিলা রোগীর বেডের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় চিকিৎসক গোহিল রুমে প্রবেশ করে তাঁদের জুতো খুলে আসার অনুরোধ করেন। এরপর শুরু হয় উত্তেজনা, যা পরিণত হয় মারামারিতে।
সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, ওই তিনজন চিকিৎসককে আক্রমণ করতে শুরু করে। রুমে উপস্থিত নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের চেষ্টায় বেশ কিছুক্ষন পর তাঁদের থামানো সম্ভব হয়। মারধরের ফলে ওষুধ এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১৫(২) (কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে কাজ করা), ৩৫২ (অবমাননাকর আচরণ করে শান্তি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে আক্রমণ করা), ৩৫১(৩) (ফৌজদারি হুমকি) এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি জোরালো হয়েছে। ভাবনগরের এই ঘটনা সেই বিতর্ককে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
চিকিৎসক গোহিল এই ঘটনার পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। গ্রেফতার হওয়া তিনজন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
চিকিৎসক গোহিল বলেছেন, “হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের কাজ রোগীদের সেবা করা, এবং এরকম পরিস্থিতি আমাদের কাজকে বাধাগ্রস্ত করে।”
এই ঘটনার পর হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্টাফরা নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন।