অরূপ চক্রবর্তী, গুয়াহাটি: ফের উত্তপ্ত মণিপুরে। সোমবার রাজ্যের চুরাচান্দপুর জেলায় দুষ্কৃতীরা চার জন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চুরাচান্দপুর জেলার মংজাং গ্রামের কাছে দুপুর প্রায় ২টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন ৬০ বছর বয়সি বৃদ্ধাও রয়েছেন।
জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা গাড়িতে যাওয়ার সময় আগে থেকে অপেক্ষা করে থাকা বন্দুকধারী দুর্বৃত্তরা তাদের হত্যা করে। ঘটনাস্থলেই চার জনেরই মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, যে গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে, সেটি চুরাচান্দপুর শহর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
চুরাচান্দপুর জেলা সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তার মতে, চার জনকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নিহতদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তাদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে। পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, নিহত ব্যক্তিরা কারা, কোথা থেকে এসেছিলেন, কোথায় যাচ্ছিলেন। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনো সংগঠন এই ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।
ঘটনার পরে গোটা এলাকায় তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে। তদন্তের সময় ঘটনাস্থল থেকে ১২টিরও বেশি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনী এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। সে সময় থেকে এই সংঘর্ষ এখনও পর্যন্ত চলছেই। মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে হওয়া এই সংঘর্ষে বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে ও অনেকে আহত হয়েছেন। এরই মধ্যে কয়েক মাস আগে রাজ্যটিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও রাজ্য থেকে বিভিন্ন সময়ে বহু সহিংস ঘটনা সামনে এসেছে।
আগের তুলনায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে বটে, তবে চুরাচান্দপুরের সোমবারের ঘটনা রাজ্যের পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। এই হামলার পরে প্রশাসন সাধারণ মানুষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং গুজব থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমানে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করে হামলাকারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ আশেপাশের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিশদ জানার চেষ্টা করছে। গোটা ঘটনার প্রেক্ষাপটে বর্তমানে পুলিশ তদন্ত করছে। সুতরাং তদন্তের পর আরও তথ্য সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।