ওয়েবডেস্ক: স্বদেশে ব্যবসা করার অনেক স্বপ্নই দেখেছিলেন বেদান্ত রিসোর্সেস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির চেয়ারম্যান অনিল আগরওয়াল। কিন্তু তুতিকোরিনে স্টারলাইট-কাণ্ডকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহকে সামনে রেখে তিনি ওই তামা কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শিল্পপতিদের যে এমন ক্ষোভ-বিক্ষোভ সঙ্গে নিয়েই এ দেশে এগোতে হয়, তা নতুন নয়। তবে কি শুধুমাত্র স্টারলাইট-কাণ্ডের জন্যই তিনি নিজের ব্যবসা উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সুদূর আফ্রিকায়? উঠছে এমন প্রশ্নও।
নিতান্তই স্ক্র্যাপ ডিলার থেকে মেটাল ম্যাগনেটে রূপান্তরিত হওয়া অনিলের যাত্রাপথ যথেষ্ট রোমাঞ্চকর। পাশাপাশি কঠিন পরিশ্রমেরও বটে। কিন্তু ২০ বছর আগে উৎপাদন শুরু হওয়া ওই স্টারলাইট কারখানাটি নিয়ে জনরোষ বা আইনি জটিলতা আজকের নয়। ২০১৩ সালে ওই কারখানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে গ্রিন ট্রাইবুনালে যায় সংস্থা। সেখান থেকে ইতিবাচক ইশারা পেয়ে বহাল তবিয়তে চলতে থাকে উৎপাদন। তারপরেও তামিলনাড়ুর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সংস্থার লাইসেন্স নবীকরণ আটকে দেয়। সংস্থা দৌড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন হয়ে পড়ে রয়েছে।
এরই মধ্যে ঘটে গেল গত মঙ্গলবারের মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে ১২ জন বিক্ষোভকারীর। রাজ্য সরকার অভিযোগের আঙুল তুলেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও অ-সরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দিকে। অর্থাৎ, এত বড়ো একটা শিল্প সংস্থাকে হাতছাড়া না করার চরম প্রবণতা উপেক্ষা করা সহজ নয়, তা পরিষ্কার। কিন্তু অনিল নিজের ব্যবসা গোটানোর কথা ভাবতে শুরু করতেই হাজারো প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।
জানা গিয়েছে, লন্ডনে তালিকাভুক্ত বেদান্ত রিসোর্সেস আদতে একটি বহুজাতিক সংস্থা। অনিল ইতিমধ্যে অংশাদারিত্ব কিনেছেন অ্যাংলো আমেরিকান পিএলসি নামের একটি বৃহৎ খননকারী সংস্থার। এরই মাঝে তিনি আফ্রিকায় বিনিয়োগ করে বসে আছেন ১ বিলিয়ন ডলার। ফলে তুতিকোরিনে উদ্গত সমস্যা থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়া তাঁর পক্ষে খুব একটা কঠিন বিষয় নয়।
হতে পারে তুতিকোরিনে লেগে থাকতে হলে তাঁকে সহ্য করতে হবে ওই সব রাজনৈতিক দল-সহ বিভিন্ন অ-সরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিক্ষোভ, পোহাতে হবে দেশের শীর্ষ আদালতের হাজিরা। পরিবেশপ্রেমীদের আন্দোলনের থেকেও যা অনেক বেশি জটিল। ওদিকে তুতিকোরিনের ঘটনার পর সংস্থার সুনামে ঘা পড়ছে। ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে শিল্প বিশ্লেষকরা অন্য চোখে দেখছে বেদান্তকে।