হাথরস (উত্তরপ্রদেশ): ধর্মগুরু ভোলে বাবার পায়ের ধুলো নিতে গিয়ে ভক্তরা পদপিষ্ট হয়েছে, এই অভিযোগ খণ্ডন করেছেন তাঁর আইনজীবী। ঘটনার এক দিন পরে তিনি বললেন, সমাজবিরোধীদের চক্রান্তেই এই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার হাথরসে এক ভক্তসমাবেশে ভোলে বাবা ধর্মোপদেশ প্রদান করার পরেই পদপিষ্টের ঘটনায় অন্ততপক্ষে ১২১ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন বহু মানুষ।
সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তা থেকে জানা যায়, ধর্মোপদেশ প্রদানের পর বাবা নারায়ণ হরি তথা সাকার বিশ্ব হরি ভোলে বাবার ‘চরণরজ’ (পায়ের ধুলো) নেওয়ার জন্য ভক্তদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তাতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।
তবে ধর্মগুরুর আইনজীবী এ পি সিং বলেন, কিছু সমাজবিরোধী চক্রান্ত করে এই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁর দাবি, “কিছু সমাজবিরোধী চক্রান্ত করেছিল। নারায়ণ সাকার হরি যখন ধর্মসভার স্থান থেকে চলে যান, তাঁর গাড়িও বেরিয়ে যায়, আমাদের স্বেচ্ছাসেবক আর অনুগামীরা বুঝতেই পারছিলেন না চক্রান্তের কারণে কী ঘটছে। এটা পরিকল্পনা করে করা হয়েছে এবং এটা নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।” তদন্ত হলে তাঁর মক্কেল পুলিশ এবং প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন ভোলে বাবার আইনজীবী।
সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে যে রিপোর্ট দেওয়া হয় তা তৈরি করেছিলেন মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট। সেই রিপোর্ট খারিজ করে দিয়ে আইনজীবী দাবি করেছেন, “নারায়ণ সাকার হরি কখনোই তাঁর অনুগামীদের তাঁর পা ছুঁতে দিতেন না। ‘চরণরজ’-র যে উল্লেখ করা হয়েছে, তা মিথ্যে। এই ধরনের কোনো ছবি বা ভিডিও নেই।”
পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, তাতে ভোলে বাবার নাম নেই। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীতে যে আশ্রম আছে, সেখানে তিনি নেই। মৈনপুরীর ডিএসপি সুনীল কুমার বলেন, “আশ্রমে ৪০-৫০ জোন সেবাদার আছেন। তিনি (ভোলে বাবা) ভিতরে নেই। কাল তিনি ছিলেন না। আজও তিনি নেই।”
হাথরসের পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে যে তদন্ত চলছে তাতে যাতে স্বচ্ছতা থাকে তার জন্য উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দিবেন পটেল তিন সদস্যের এক বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করেছেন। সেই কমিশনের প্রধান হলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ব্রিজেশ কুমার শ্রীবাস্তব। হাথরসের ঘটনার বিভিন্ন দিক নিয়ে কমিশন দু’ মাস ধরে অনুসন্ধান করবে।