হাথরাস: হাথরাসের একটি স্কুল হোস্টেলে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে কালাজাদুর চক্রে বলি দেওয়ার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার হাথরাসের পুলিশ সুপার (SP) নীপুন আগরওয়াল জানিয়েছেন যে ডিএল পাবলিক স্কুলের ডিরেক্টর দীনেশ বাঘেল, তার বাবা যশোধন সিং, এবং তিন শিক্ষক—লক্ষ্মণ সিং, বীরপাল সিং ও রামপ্রকাশ সোলাঙ্কি—এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে যে স্কুলের সাফল্য এবং খ্যাতি লাভের জন্য কালাজাদুর প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই শিশু বলি দেওয়া হয়েছে। বাঘেলের বাবা যশোধন সিং দীর্ঘদিন ধরে কালাজাদু এবং তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানে বিশ্বাস করতেন। তিনি এবং তার ছেলে সহ ওই তিন শিক্ষক মিলে একটি শিশু বলি দেওয়ার মাধ্যমে স্কুলের সাফল্য লাভের চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, এর আগেও একটি শিশুকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
ডিএল পাবলিক স্কুলের প্রায় ৬০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে এবং যে হোস্টেলে ওই ছাত্রকে হত্যা করা হয়, সেখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা থাকে। নিহত ছাত্রটি দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত কৃষণ কুশওয়াহার সন্তান।
সোমবার সকালে, হোস্টেলের এক কর্মচারী এবং অন্যান্য ছাত্ররা শিশুটিকে তার বিছানায় নিস্তেজ অবস্থায় দেখতে পায়। স্কুলের ডিরেক্টর দীনেশ প্রথমে ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করেন এবং শিশুটির দেহ গাড়িতে তুলে আগ্রা এবং আলীগড়ে ঘুরতে থাকেন। পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় যে শিশুটি “অসুস্থ”। তবে, স্কুলে পৌঁছানোর পর কুশওয়াহা পরিবারের সদস্যরা ছেলেটির কোনো খোঁজ না পেয়ে পুলিশের সাহায্য নেন।
পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বাঘেলের সন্ধানে নেমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার গাড়ি থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহের ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, রবিবার রাতে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়।
হাথরাস পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “পরিবারের অভিযোগের পর ডিরেক্টরের গাড়ি থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০২(১) অনুযায়ী খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।”
সব খবরের আপডেট পড়ুন এখানে