‘দিলওয়ালো কা দিল্লি’। সত্যিই আর দিল্লিতে ‘দিলওয়ালো’রা বাস করেন কি না, তা আবার প্রশ্ন তুলে দিল একটি সিসিটিভি ফুটেজ।
পেট চালানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা মতিবুলকে দিল্লিতে দু’টি কাজ করতে হত। সকালে ই-রিক্সা চালাতেন আর রাতে একটি কারখানায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার সময় পশ্চিম দিল্লির সুভাষনগরে কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। হঠাৎ-ই পিছন থেকে একটি টেম্পো এসে মতিবুলকে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়ে যান রাস্তায়। তার পর শুরু হয় একের পর এক অমানবিক ঘটনাক্রম। যে ঘটনাক্রমের সাক্ষী সিসিটিভি ফুটেজ।
ফুটেজে দেখা যায় টেম্পোর ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে মতিবুলকে দেখল। বেঁচে আছে দেখে আবার ভাবলেশহীন ভাবে টেম্পোতে উঠে চালিয়ে চলে গেল। ঘটনার পরের নব্বই মিনিট ধরে অনেকেই হেঁটে যায়। সবাই দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছে মতিবুল। দেখে আর চলে যায়।
এই সময়ের মধ্যে এক ব্যক্তিকে দেখা যায় রিকশা থামিয়ে মতিবুলের কাছে আসতে। আশা জাগে, এ বার বোধ হয় তার চিকিৎসার কোনও বন্দোবস্ত হবে। কিন্তু লোকটি মতিবুলকে এক ঝলক দেখে সোজা চলে যায় তার পকেট থেকে পড়ে যাওয়া মোবাইলের দিকে। দু’টো মোবাইল তুলে নিয়ে আবার রিকশা চালিয়ে চলে যায় সে।
প্রায় সাতটা নাগাদ টহলদারি পুলিশের একটি দল এসে মতিবুলকে উদ্ধার করে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরের একটি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে মতিবুলের।
স্থানীয় এক দোকানদার জানিয়েছেন, মতিবুলের দু’টি ছেলে এবং দু’টি মেয়ে। প্রতি দিন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ শেষ হয়ে গেলে তিনি ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে গিয়ে চায়ের দোকানে এক কাপ চা খেয়ে বাড়ি ফিরতেন।
সিসিটিভ ফুটেজ ভালো করে খতিয়ে দেখে টেম্পো ড্রাইভার ও রিকশাচালককে খুঁজছে পুলিশ।
এদিকে ঘটনা পরই রাজধানীর আপ সরকার ঘোষণা করেছে, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পুরস্কার দেওয়া হবে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।