ভারতের বিভিন্ন জায়গায় একেক রকম নামে উদযাপিত হয় বসন্তকালীন রঙের উৎসব। কোথাও মহিলারা পুরুষদের লাঠি দিয়ে তাড়ান, আবার কোথাও ফুলের বৃষ্টি হয় আকাশ থেকে। কোনো জায়গায় হোলি মানেই গান-বাজনার উৎসব, আবার কোথাও হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। উত্তরপ্রদেশের উত্তেজনাপূর্ণ লাঠমার হোলি থেকে শুরু করে উত্তরাখণ্ডের সুরেলা কুমাঁওনি হোলি—প্রতিটি অঞ্চলের হোলির নিজস্ব রং ও মজা আছে।
৯টি বিশেষ হোলি উৎসব
১. লাঠমার হোলি (বারসানা ও নন্দগাঁও, উত্তরপ্রদেশ)
এখানে মহিলারা মজা করে পুরুষদের লাঠি দিয়ে আঘাত করেন, আর পুরুষরা তা এড়ানোর চেষ্টা করেন। মজার এই খেলার পর সবাই একসঙ্গে রং খেলেন।
২. হুরাঙ্গা (বলদেও, উত্তরপ্রদেশ)
মথুরার কাছে দাউজি মন্দিরে হোলিতে নারীরা পুরুষদের পোশাক টেনে ছিঁড়ে দেন ও রঙে রাঙিয়ে দেন। এ এক হাসি-মজার উন্মাদনা!
৩. ফুলের হোলি (বৃন্দাবন, উত্তরপ্রদেশ)
এখানে রঙের বদলে হোলি খেলা হয় ফুল দিয়ে! বাঁকেবিহারী মন্দিরে ফুলের বৃষ্টি হয় আর ভক্তিগীতির সুরে মেতে ওঠে সবাই।
৪. রং পঞ্চমী (মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ)
হোলিকার দহন শেষ হওয়ার পাঁচ দিন পর রং খেলা হয়। এটি মূলত একটি আধ্যাত্মিক উৎসব, যেখানে বিশ্বাস করা হয়, রঙের মাধ্যমে আত্মা পবিত্র হয়।
৫. শিগমো (গোয়া)
গোয়ার শিগমো হোলি মানেই রঙের উৎসবের সঙ্গে লোকনৃত্য, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বড়সড় ঝাঁকজমকপূর্ণ প্রদর্শনী।
৬. মঞ্জল কুলি (কেরল)
কেরলের কুদুম্বি সম্প্রদায় হলুদ মিশ্রিত জলে একে অপরকে ভিজিয়ে হোলি উদযাপন করে। এর সঙ্গে থাকে ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও নৃত্য।
৭. দোল যাত্রা (পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা)
এটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, গান গেয়ে, বিশাল শোভাযাত্রার মাধ্যমে হোলি পালন করা হয়।
৮. ইয়াওশাং (মণিপুর)
মণিপুরের ছয় দিনের হোলি উৎসব ‘ইয়াওশাং’—এখানে আগুন জ্বালিয়ে উৎসব শুরু হয়, তারপর রং খেলা, লোকনৃত্য ও খেলাধুলার আয়োজন হয়।
৯. কুমাঁওনি হোলি (উত্তরাখণ্ড)
এটি শান্ত ও সুরেলা হোলি, যেখানে উচ্চস্বরে ডিজে নয়, বরং ধ্রুপদী সংগীত, সঙ্গীতসভার মাধ্যমে হোলি উদযাপিত হয়।
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের হোলির এই বৈচিত্র্যই উৎসবটিকে আরও রঙিন করে তোলে!