প্রয়াগরাজ: আইআইটি বম্বের প্রাক্তনী এবং কুম্ভমেলায় আলোচনার কেন্দ্রে আসা ‘আইআইটিয়ান বাবা’ নামে পরিচিত অভয় সিংহ, গুরু অবমাননার অভিযোগে শনিবার রাতে জুনা আখড়া থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তার গুরু মহন্ত সোমেশ্বর পুরির বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেছেন।
এই ঘটনার পর জুনা আখড়ার পক্ষ থেকে অভয় সিংহকে আখড়ার ক্যাম্প এবং তার আশপাশের এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আখড়ার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মহন্ত হরি গিরি বলেন,“গুরু-শিষ্য সম্পর্ক এবং সন্ন্যাসের আদর্শকে সম্মান না করা গুরুতর অপরাধ। জুনা আখড়ায় শৃঙ্খলার গুরুত্ব অপরিসীম। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে কেউই আখড়ার সদস্য থাকতে পারবে না, সে আমি হই বা অভয় সিংহ।”
মহন্ত হরি গিরি আরও বলেন,“অভয় সিংহ গুরু এবং আখড়ার আদর্শের পরিপন্থী আচরণ করেছেন। এই কারণে আখড়ার শৃঙ্খলা কমিটি তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। তিনি আখড়ার সদস্যপদ ফিরে পেতে চাইলে গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা ও আখড়ার শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।”
অভয় সিংহ, যিনি মহন্ত সোমেশ্বর পুরির শিষ্য ছিলেন, আগে একটি উচ্চ বেতনের মহাকাশ প্রকৌশল পেশা ছেড়ে আধ্যাত্মিক জীবন গ্রহণ করেন।
তবে, তার সামাজিকমাধ্যম কার্যকলাপ এবং বিতর্কিত মন্তব্য তাঁকে সমস্যায় ফেলে। এক লক্ষেরও বেশি ইনস্টাগ্রাম অনুসারী থাকা সত্ত্বেও, সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি রিলে তিনি তার পিতাকে “হিরণ্যকশ্যপ” এবং তার গুরুকে “পাগল” বলে উল্লেখ করেন। এই মন্তব্য তার বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং আখড়ার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।
এর আগেও তাঁর গুরু তাঁকে আখড়া ক্যাম্প থেকে বহিষ্কার করেছিলেন, কিন্তু তিনি মেলা ত্যাগ না করে অন্য এক সন্তের ক্যাম্পে আশ্রয় নেন।
ছেলে ফিরে আসুক, চাইছেন বাবা
তাঁর বাবা করণ গ্রেওয়াল ছেলের বাড়ি ফেরার আকুতি জানিয়ে বলেছেন, “আমরা চাই অভয় বাড়ি ফিরে আসুক, কিন্তু সে যে পথে পা বাড়িয়েছে, তাতে তার ফিরে আসা হয়তো সম্ভব নয়।”
করণ গ্রেওয়াল, ঝাঝর কোর্টের একজন আইনজীবী, তার ছেলের ছোটবেলার অসাধারণ মেধার কথা স্মরণ করে বলেন,“ছোটবেলা থেকেই অভয় পড়াশোনায় মেধাবী ছিল। স্থানীয় স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর সে দিল্লিতে আইআইটি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং আইআইটি মুম্বইয়ে স্নাতক হয়েছিল।”
আইআইটি থেকে স্নাতক হওয়ার পর অভয় ডিজাইনিংয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন এবং দিল্লি ও কানাডায় শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলিতে কাজ করেন। কানাডায় প্রতি মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকা উপার্জন করলেও, মানসিক বিষণ্ণতা এবং জীবনের প্রকৃত অর্থ খোঁজার তাগিদ তাকে আধ্যাত্মিকতার পথে টেনে আনে।
করণ গ্রেওয়াল বলেন, “আমাদের শেষ কথা হয়েছিল ছয় মাস আগে। তারপর থেকেই সে পরিবার থেকে দূরে সরে গিয়েছে। সে শ্রী পঞ্চদশনাম জুনা আখড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং সন্ন্যাস গ্রহণ করেছে।”
তিনি ছেলে মঙ্গল কামনা করে বলেন “আমার ছেলে আমাদের জন্য গর্বের ছিল, কিন্তু এখন সে তার নিজের পথ বেছে নিয়েছে। আমরা তার সুখের জন্য প্রার্থনা করি।”
महात्मा गांधी जी के बारे में महाकुंभ से वायरल हुए "IITian baba" के विचार!! pic.twitter.com/TcXcE8N4ki
— Ankit Kumar Avasthi (@kaankit) January 17, 2025