ওয়েবডেস্ক: আরএসএসের সভায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে সম্মতি নিয়ে যথেষ্ট তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। কিন্তু এর নেপথ্যে উঠে আসছে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা শুনলে আশ্চর্য হতে হয় বই-কি!
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর পুত্র রাজীব গান্ধী কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়কে একটি কঠিন প্রশ্ন করেছিলেন। তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর সে সময় কংগ্রেসের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ নেতাটি কে? এমন প্রশ্নের উত্তর প্রণববাবু বলেছিলেন নিজের নামটাই।
রাজনৈতিক মহলের মতেও, প্রণব মুখোপাধ্যায় সেই নেতা, যিনি কংগ্রেসের বঙ্গ রাজনীতিকে কয়েক দশক নিয়ন্ত্রণ করেছেন, আবার কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন দল গড়ার পরেও তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক পুরোদস্তুর বজায় রেখেছেন। যে কারণে জাতীয় কংগ্রেস তাঁকে রাষ্ট্রপতিপদের জন্য প্রার্থী করলে তৃণমূল আর শিবসেনা এক যোগে উদ্বাহু হয়ে সমর্থন জানিয়েছেন। সমকালীন রাজনীতিকদের মধ্যে এ ভাবে সর্বদলীয়-সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে সম্ভবত তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কংগ্রেসের অন্দরে তাঁর ভূমিকা সর্বজনবিদিত। তবে রাষ্ট্রপতিপদ থেকে প্রাক্তন হয়ে যাওয়ার পরও যে তিনি তাঁর রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের খাতার ঝাঁপ বন্ধ করে দেননি তা স্পষ্ট হয়ে গেল মাসখানেক পরে নাগপুরে অনুষ্ঠিতব্য আরএসএসের সভায় বক্তব্য রাখার প্রস্তাবে সায় জানানোয়। এই বিষয়টি নিয়েই এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে তাঁর পুরোনো দলে। যে হেতু বিষয়টি আজ প্রকাশ্যে। কিন্তু এর নেপথ্য কী ঘটে চলেছে, তাতে সামান্যতম আলোকপাত করলেই স্পষ্ট হতে পারে এক চাঞ্চল্যকর ভবিষ্যতের পূর্বাভাস। আগামী লোকসভা নির্বাচনে অ-বিজেপি এবং অ-কংগ্রেস সরকার গঠনের ডাক দিয়ে শুরু হওয়া কর্মযজ্ঞের নেপথ্যে কতটা ভূমিকা রয়েছে এই ক্ষুরধার বঙ্গসন্তানের?
দেশের তাবড় রাজনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি বলছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে অ-বিজেপি এবং অ-কংগ্রেস তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে তুলতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। ওই রাজনীতিকদের কেউ কেউ এমনও দাবি করেছেন, তৃতীয় ফ্রন্টের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তাঁকেই তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। এই বিষয়টি নিয়ে তাঁর রাজাজি মার্গের বাসভবনে কয়েক জন নেতার আনাগোনার খবরও মিলেছে।
It was great pleasure to have enlightened company of Shri @CitiznMukherjee, Shri HD Deve Gowda, Shri LK Advani & Shri @SitaramYechury at Naveen Niwas. Had wonderful interaction over our much loved #Pakhala & Odia delicacies #PiajaPeetha #SagaBadi #Drumstickfry & famed #Chhenapoda pic.twitter.com/GWcpVGwL9t
— Naveen Patnaik (@Naveen_Odisha) January 27, 2018
এই ইঙ্গিতকে আরও জোরালো করেছে, গত জানুয়ারিতে ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া বৈঠকে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের ডাকা সেই নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, জেডি (এস) নেতা এইচ ডি দেবগৌড়া, প্রবীণ বিজেপি নেতা এল কে আডবাণী এবং অবশ্য নবীন নিজে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নিজের টুইটারে লিখেছিলেন, সেটা ছিল একটা বিরাট প্রাপ্তি। তবে ততৃীয় ফ্রন্ট গঠন নিয়ে সেই খাওয়ার টেবিলে যে বিস্তর আলোচনার অবকাশ ছিলই, তা বলাই বাহুল্য।