সুপ্রিম কোর্টের এক সাম্প্রতিক মামলায় এক ব্যক্তি বিনা খোরপোশে বিবাহ বিচ্ছেদ পেলেও স্ত্রীকে মুম্বইয়ের কাছে থাকা নিজের ফ্ল্যাট ছেড়ে দিতে হয়েছে। তবে স্ত্রীকে এই ফ্ল্যাটের মালিকানা নিতে কোনো স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়নি। এই দম্পতি একাধিক আদালতে মামলা না করে সরাসরি ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম কোর্টে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।
ওই দম্পতি প্রথমে মুম্বইয়ের বান্দ্রা পারিবারিক আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন। তবে মামলার চলাকালীন স্বামী এটি দিল্লির কারকারদুমা জেলা আদালতে স্থানান্তরের আবেদন করেন। মামলার বিচার চলাকালীন তাঁদের মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ায় পাঠানো হয়, কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়। এরপর স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য সুপ্রিম কোর্টে পৃথকভাবে ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে আবেদন করেন।
সুপ্রিম কোর্ট ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে রায়ে জানায়, বিবাহ বিচ্ছেদের মূল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মুম্বইয়ের কাছে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাট। স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই ফ্ল্যাটের মালিকানা দাবি করেন এবং কে এই ফ্ল্যাট কিনতে কত টাকা দিয়েছেন, তা নিয়ে মতবিরোধ চলছিল। পরবর্তী সময়ে স্বামী ফ্ল্যাটের সব অধিকার ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে স্ত্রীও খোরপোশ দাবি না করেন। উভয়েই বিচ্ছেদ মেনে নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট এই চুক্তির স্বীকৃতি দেয়।
সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানায় যে এই ফ্ল্যাটের পুরো মালিকানা স্ত্রীকে দেওয়া হবে এবং স্বামীর কোনো দাবি থাকবে না। স্ত্রী ভবিষ্যতে স্বামীর কাছ থেকে কোনো খোরপোশ বা অন্য কোনো অর্থ দাবি করতে পারবেন না। ফ্ল্যাটটি যেহেতু বিবাহ বিচ্ছেদের চুক্তির অংশ, তাই স্ত্রীকে এর জন্য স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে না। এই রায়ের মাধ্যমে আদালত স্পষ্ট করেছে যে, বিবাহবিচ্ছেদের চুক্তির অংশ হিসেবে সম্পত্তি হস্তান্তর হলে, তার ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা যাবে না।