ভারতে কর্পোরেট মুনাফার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে না মজুরি, প্রকাশ্যে এলো ২০২৪-২৫ অর্থনৈতিক সমীক্ষা।
শুক্রবার সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি. আনন্দ নাগেশ্বরন-এর তত্ত্বাবধানে তৈরি এই সমীক্ষা দেখাচ্ছে, ভারতীয় কর্পোরেট সংস্থাগুলির মুনাফা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছালেও, সাধারণ কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধি সেই তুলনায় উল্লেখযোগ্য নয়।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ‘২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কর্পোরেট মুনাফা ১৫ বছরের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। আর্থিক, জ্বালানি ও অটোমোবাইল খাতে এই বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। নিফটি ৫০০ সংস্থার ক্ষেত্রে মুনাফার অনুপাত ২০০২-০৩ সালের ২.১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৩-২৪ সালে ৪.৮ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ২০০৭-০৮ সালের পর সর্বোচ্চ।’
মুনাফা বেড়েছে, মজুরি নয়
তবে এই মুনাফা বৃদ্ধির বিপরীতে মজুরি বৃদ্ধি তেমন ঘটেনি।
- “২০২৩-২৪ সালে কর্পোরেট মুনাফা বেড়েছে ২২.৩ শতাংশ, কিন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১.৫ শতাংশ।”
- স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI)-র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৪,০০০ তালিকাভুক্ত সংস্থার রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ, অথচ কর্মচারী খরচ বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ সালে ছিল ১৭ শতাংশ। এটি স্পষ্ট করছে, খরচ কমানোতেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে, নতুন কর্মসংস্থানে নয়।
আয়ের বৈষম্য ও অর্থনীতির ঝুঁকি
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘বড় সংস্থাগুলির মুনাফার অনুপাত বৃদ্ধির ফলে আয়ের বৈষম্য বাড়ছে। মজুরি বৃদ্ধি স্থবির থাকলে তা অর্থনীতির উপর চাপ ফেলতে পারে, কেননা আয় বাড়লে মানুষের খরচ বাড়ে, যা অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি’
সমীক্ষা আরও বলছে, ‘যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে শিল্পায়ন হয়েছিল, সেখানে ন্যায্য আয়ের বণ্টন বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। জাপানি শ্রমিকেরা কম বেতন পেয়েও শিল্পায়নের উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছিলেন।’
মজুরি বৃদ্ধির পথ কোথায়?
সমীক্ষার মতে, অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে—
দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে হবে।
মজুরির উপযুক্ত বৃদ্ধি ঘটাতে হবে।
নৈতিক ও ন্যায্য নীতি গ্রহণ করতে হবে, যা মূলধন ও শ্রমের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
আপনার মত কী? ভারতের কর্পোরেট ক্ষেত্রের মুনাফা বৃদ্ধি হলে কর্মীদের মজুরি কেন বাড়ছে না? আপনার মতামত জানান!