মোদী সরকার বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ ও অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও সুনির্দিষ্ট করতে একটি নতুন আইন তৈরির পরিকল্পনা করছে। “ওভারসিজ মোবিলিটি (সুবিধা ও কল্যাণ) বিল, ২০২৪” শীর্ষক এই খসড়া আইনের মাধ্যমে নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক এবং সুষ্ঠু অভিবাসনের কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সংসদের বিদেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির নেতৃত্বে থাকা কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এই বিলের রিপোর্ট সোমবার লোকসভায় উপস্থাপন করেন।
১০৪ ভারতীয়কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়ন
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক অভিবাসন অভিযানে ১০৪ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ৩৩ জন গুজরাট ও হরিয়ানার, ৩০ জন পাঞ্জাবের, তিনজন উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের এবং দু’জন চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা। এ ছাড়া, বিতাড়িতদের মধ্যে ১৯ জন মহিলা ও ১৩ জন শিশু ছিল, যাদের মধ্যে পাঁচ, সাত ও চার বছর বয়সী শিশুরাও ছিল।
বুধবার আমৃতসর বিমানবন্দরে একটি মার্কিন সামরিক সি-১৭ বিমানে হাতকড়া ও শেকল পরিহিত অবস্থায় তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়। এই ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বিদেশে থাকা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বাস
বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর সংসদে জানিয়েছেন, ভারত সরকার বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। ইউক্রেন সংকটের সময় ভারতীয় ছাত্রদের ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আমরা জরুরি পরিস্থিতির জন্য সবসময় প্রস্তুত। প্রয়োজন হলে বিশেষ উড়ান চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।”
শশী থারুরের সমালোচনা
কংগ্রেস নেতা শশী থারুর এই বিতাড়ন প্রক্রিয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো নতুন কিছু নয়, কিন্তু এবারের মতো এতটা কঠোর এবং অমানবিক উপায়ে তা আগে হয়নি।” তিনি আরও জানান, গত বছর বাইডেন প্রশাসন ১,১০০ ভারতীয়কে বিতাড়িত করেছিল, কিন্তু এবারের ঘটনার চরম নিষ্ঠুরতা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়েছে।
ভারতীয়দের অবৈধ অভিবাসনের প্রবণতা বৃদ্ধি
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ির ফলে অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টায় ভারতীয়দের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার বিপজ্জনক রুট দিয়ে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন, যা প্রায়শই ব্যর্থ হয়। যদিও আইনসিদ্ধ অভিবাসনের পথ খোলা রয়েছে, তবু অনেক ভারতীয় বিপজ্জনক এই পথ বেছে নিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার যে নতুন অভিবাসন আইন আনতে চলেছে, তা ভারতীয় কর্মীদের বৈধ উপায়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে এবং অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকি কমাবে।