পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহত ২৬ নিরীহ পর্যটক। এই ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গোটা দেশে তৈরি হয়েছে ক্ষোভের স্রোত। ভারত সরকার ইতিমধ্যেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই হামলার পিছনে যারা আছে, তাদের কেউ রেহাই পাবে না। পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে কেন্দ্র সরকার বন্ধ করেছে পাকিস্তানি দূতাবাস এবং বাতিল করেছে সিন্ধু জলচুক্তিও। এরই মাঝে গোটা দেশে যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
চিন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যদি যুদ্ধ বাঁধে, তবে সেটা একাধিক ফ্রন্টে হতে পারে। কারণ চিন-পাকিস্তান মৈত্রী কারও অজানা নয়। অতীতে চিন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল ১৯৬২ সালে। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে। ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশকে মদত দিলেও, দিল্লির সঙ্গে চিন দ্বন্দ্বে যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া, পাকিস্তানকে সরাসরি সমর্থন জানিয়ে ভারতের মতো বড় বাজার তারা হাতের বাইরে করতে চাইবে না বলেই মনে করছেন বিশেজ্ঞরা। ভারত যেমন সামরিক দিক থেকে আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী, তেমনই কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও ভারতের অবস্থান সুদৃঢ়।
আমেরিকা
বর্তমানে বিশ্বমঞ্চে ভারত একটি বড় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। ভারতের সঙ্গে রয়েছে আমেরিকার দৃঢ় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যা বিশ্বে সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ হিসেবে বিবেচিত, তারা বিগত কয়েক বছরে পাকিস্তানের উপর আস্থা হারিয়েছে সন্ত্রাসবাদে মদতের কারণে। ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমেরিকার সমর্থন ভারতের দিকে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। কিন্তু গাজা কিংবা ইউক্রেনের মতো নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই তাঁর। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।’’
#WATCH | On #PahalgamTerroristAttack, US President Donald Trump says, "I am very close to India and I'm very close to Pakistan, and they've had that fight for a thousand years in Kashmir. Kashmir has been going on for a thousand years, probably longer than that. That was a bad… pic.twitter.com/R4Bc25Ar6h
— ANI (@ANI) April 25, 2025
রাশিয়া
এই তালিকায় রয়েছে রাশিয়াও। ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক বহু দশকের পুরনো। প্রতিরক্ষা চুক্তি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও রাশিয়া ভারতের পাশে থেকেছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা। ইজরায়েলও ভারতের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র, যারা কারগিল যুদ্ধেও ভারতকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছিল।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের পাশে বড় কোনও শক্তির দেখা মেলা ভার। একমাত্র চিনই এই মুহূর্তে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ। যদিও অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে চিন নিজেই চাপের মধ্যে রয়েছে। ইসলামি দেশগুলির মধ্যে কিছু সর্মথন থাকলেও, তারা সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করবে—এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যদি যুদ্ধ, ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে অনেক বেশি সমর্থন পাবে। কিন্তু একইসঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সংঘর্ষ এড়িয়ে কূটনৈতিক পথে সমাধানই কাম্য বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
পড়ুন: “আমরা তিন দশক ধরে আমেরিকার হয়ে ‘নোংরা কাজ’ করছি” — বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর