কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ ঘোষণা করল ভারত। বুধবার নয়াদিল্লি জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া ঐতিহাসিক ইন্দাস জলচুক্তি আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
ইন্দাস চুক্তি: শান্তির প্রতীক থেকে সন্ত্রাসবিরোধী কূটনৈতিক অস্ত্র
১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, নয় বছরের আলোচনা শেষে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান ইন্দাস জলচুক্তিতে স্বাক্ষর করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আয়ুব খানের নেতৃত্বে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তির শর্ত: কোন দেশ পায় কোন নদীর জল
এই চুক্তি অনুযায়ী—
- ভারতের অধিকার: পূর্ব দিকের তিনটি নদী—সতলজ, বিয়াস ও রবি—এর প্রায় ৩৩ মিলিয়ন একর ফুট (MAF) জল সম্পূর্ণভাবে ভারতের জন্য নির্ধারিত।
- পাকিস্তানের অধিকার: পশ্চিম দিকের তিনটি নদী—ইন্দাস, ঝিলম এবং চেনাব—এর প্রায় ১৩৫ MAF জল প্রধানত পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছে।
ভারত এই পশ্চিম দিকের নদীগুলির জল দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। তবে পাকিস্তান চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় প্রকল্পগুলির নকশা নিয়ে আপত্তি জানাতে পারে।
বন্ধুত্বের চেতনায় তৈরি, এখন জবাবের হাতিয়ার
চুক্তির প্রস্তাবনায় দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার মানসিকতা এবং শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে। কিন্তু, সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ। পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া সরাসরি কূটনৈতিক স্তরে গিয়ে পৌঁছল।
বিশেষজ্ঞদের মত: জলের কূটনীতি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করবে পাকিস্তানের উপর
বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্দাস চুক্তি স্থগিতের ফলে পাকিস্তানের জলের ওপর নির্ভরতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। একই সঙ্গে বিশ্বমঞ্চে ভারত সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থান আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারবে।
পাওহেলগাঁয়ে পর্যটকদের উপর হামলা কেন? | জঙ্গিদের টার্গেটিং নিয়ে বলছেন মেজর (অব.) অর্ণবেশ মিত্র