প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বিকশিত ভারত’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ বার নিজস্ব বুলেট ট্রেন তৈরি করতে চলেছে ভারত। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ট্রেনগুলির সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ২৮০ কিলোমিটার। যে কারণে জাপানের শিনকানসেন (বুলেট ট্রেন) কেনার পরিকল্পনা থেকে সরে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার।
চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আইসিএফ) ভারতীয় রেলের জন্য বেঙ্গালুরুর বিইএমএল (BEML)-এর সঙ্গে ৮৬৭ কোটি টাকার চুক্তি করেছে। বিইএমএল তাদের বেঙ্গালুরুর কারখানায় এই বুলেট ট্রেনের দুটি সেট তৈরি করবে। প্রতিটি ট্রেন সেটে থাকবে আটটি কোচ। ২০২৬ সালের শেষে প্রথম ট্রেনটি সরবরাহ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
প্রথম বুলেট ট্রেন ২০২৬ সালে গুজরাতের সুরাত থেকে বিলিমোরা রুটে চালু হবে। এই নতুন ট্রেনগুলি সম্পূর্ণ দেশীয় ডিজাইন এবং নির্মাণের মাধ্যমে তৈরি হবে। মুম্বই-অমদাবাদ রুটের জন্য জাপানি বুলেট ট্রেন আমদানির খরচ এবং ডেলিভারির সময় নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই চুক্তির মোট মূল্য ৮৬৬.৮৭ কোটি টাকা। যেখানে ডিজাইন, উন্নয়ন ব্যয় এবং ভবিষ্যৎ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও পরীক্ষা কেন্দ্রের খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিটি কোচ তৈরি করতে খরচ হবে আনুমানিক ২৭.৮৬ কোটি টাকা।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সংসদে জানিয়েছেন, এই বুলেট ট্রেনের চেয়ার কার সিটে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন, স্বয়ংক্রিয় দরজা, ক্লাইমেট কন্ট্রোল, সিসিটিভি নজরদারি, মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট, উন্নত আলোক ব্যবস্থা এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। এছাড়া বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীদের জন্যও থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা।
বলে রাখা ভালো, ভারতীয় রেল ইতিমধ্যেই রাজস্থানে একটি স্ট্যান্ডার্ড গেজ ট্র্যাক তৈরি করেছে, যেখানে উচ্চগতির রেলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
অন্য দিকে, ভারতীয় রেলওয়ে লাতুরে নিজের রেল কোচ কারখানায় মোট ১,৯২০টি বন্দে ভারত স্লিপার কোচ নির্মাণের জন্য রাশিয়ান সংস্থা ট্রান্সম্যাশহোল্ডিং (টিএমএইচ)-এর সঙ্গে ৬.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আধিকারিকদের বক্তব্য, বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন তৈরির বরাত তিনটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল বিইএমএল, কাইনেট রেলওয়ে সলিউশন (রাশিয়ান সংস্থা টিএমএইচ এবং রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে) এবং টিটাগড় রেল সিস্টেমস লিমিটেড ও ভারত হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (বিএইচইএল)- এর একটি কনসোর্টিয়াম।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল অ্যারেস্ট: কোটি কোটি টাকা হারাচ্ছেন মানুষ, কী ভাবে থাকবেন সুরক্ষিত