ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার আবহে বদল আনল ভারত সরকার। যুদ্ধ বা সংঘাতের সময় আর আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করবে না সেনার তিন বাহিনী— স্থল, নৌ ও বিমান। বরং, একসঙ্গে, একই কমান্ডারের নেতৃত্বে চলবে সামরিক কার্যকলাপ। এই নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে ২০২৪ সালের ২৭ মে থেকে। এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২৩ সালের বাদল অধিবেশনে সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়া ‘ইন্টার-সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন (কম্যান্ড, কন্ট্রোল অ্যান্ড ডিসিপ্লিন) বিল’-এর পর ১০ মে ২০২৪-এ সেই আইন সেনাবাহিনীতে কার্যকর হয়। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল তার প্রয়োগ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিন বাহিনীর যৌথ অপারেশনে সময় ও সমন্বয়ের যে সমস্যা আগে থাকত, তা এবার থাকবে না। জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। কোনও বিভ্রান্তির সুযোগ থাকবে না।
সরকারি সূত্রের খবর, এতদিন সীমান্তে একসঙ্গে অপারেশন চললেও তিন বাহিনী আলাদা কমান্ড কাঠামোর অধীনে থাকত। ফলে এক বাহিনীর সিদ্ধান্তের জন্য অন্য বাহিনীকে অপেক্ষা করতে হত। এবার সেই অসুবিধা কাটিয়ে উঠতেই এই নয়া রণকৌশল।
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে এমন এক সময়, যখন সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে। পাল্টা হামলার চেষ্টা চালায় পাকিস্তানও। তবে ভারতীয় সেনা তা সফলভাবে প্রতিহত করেছে বলে জানায় প্রতিরক্ষা সূত্র। প্রায় তিন দিনের সংঘর্ষের পর উভয় দেশ আপাত শান্তিতে ফিরেছে।
সরকারি সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে নতুন এই একক কমান্ড কাঠামো চালু করা হচ্ছে ভারতীয় সেনার পশ্চিম ও উত্তর কমান্ডে, যা পাকিস্তান সীমান্তে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। পরে ধাপে ধাপে দেশের অন্যান্য সীমান্তে এই নিয়ম চালু হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত ভারতের সেনা রণকৌশলে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।