দীর্ঘ দূরত্বের যাত্রায় সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত ভারতে রেল পরিষেবা। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ রেলে ভ্রমণ করে। তবে অনেক সময় যাত্রীরা টিকিট বুক করার পরও যাত্রা করতে পারেন না, যার ফলে সেই টিকিট নষ্ট হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে, সেই টিকিট কি অন্য কারও নামে বদলানো সম্ভব? ভারতীয় রেল এ নিয়ে কিছু নিয়ম তৈরি করেছে, যা এই সুবিধা দিয়ে থাকে। চলুন এই নিয়মগুলো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কাদের নামে টিকিট বদলানো যাবে?
পরিবারের সদস্যদের জন্য
যদি যাত্রা বাতিল হয়, তবে টিকিট পরিবারের কোনও সদস্যের (যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী বা সন্তান) নামে বদলানো যেতে পারে। এর জন্য পারিবারিক সম্পর্ক প্রমাণের নথি জমা দিতে হবে।
পড়ুয়াদের জন্য
দল বেঁধে পড়ুয়াদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক জনের টিকিট অন্য পড়ুয়ার নামে বদলানোর সুযোগ দেয় রেল। এর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একটি অনুরোধপত্র প্রয়োজন।
প্রতিরক্ষা বা আধাসামরিক বাহিনীর জন্য
প্রতিরক্ষা কর্মীদের টিকিট তাদের ইউনিটের অন্য সদস্যের নামে বদলানো যেতে পারে। এর জন্য ইউনিট প্রধানের অনুমোদন এবং অনুরোধপত্র জমা দিতে হবে।
বিবাহ বা দলগত ভ্রমণের জন্য
যদি বিবাহ বা অন্য কোনও কারণ উপলক্ষ্যে একই সঙ্গে একদল যাত্রী ভ্রমণ করে, তবে দলের সদস্যদের নাম বদলানোর সুযোগ রয়েছে। এর জন্য আয়োজকের একটি লিখিত অনুরোধপত্র প্রয়োজন।
টিকিট বদলানোর প্রক্রিয়া
- টিকিট বদলানোর জন্য যাত্রীকে রেলের সংশ্লিষ্ট অফিসে একটি লিখিত অনুরোধপত্র জমা দিতে হবে।
- যাত্রার তারিখের অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
- পারিবারিক সম্পর্কের প্রমাণ, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ইউনিটের পত্র এবং পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে।
একবার বদলানো টিকিট পুনরায় বদলানো যাবে না
এই সুবিধা শুধুমাত্র কনফার্ম টিকিটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ওয়েটিং লিস্ট বা আরএসি টিকিটের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। টিকিট বদলানোর নিয়মে একবার নাম বদলে গেলে, তা আর অন্য কারও নামে বদলানো যাবে না। এই সুবিধা আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে বুক করা ই-টিকিটে প্রযোজ্য নয়। ই-টিকিট বদলানোর জন্য নিকটস্থ রেলওয়ে স্টেশনের রিজার্ভেশন কাউন্টারে যোগাযোগ করতে হবে।
পাশাপাশি, এই সুবিধাটি ব্যবহারের আগে যাত্রীকে নিশ্চিত করতে হবে যে প্রয়োজনীয় নথি এবং আবেদন যথাসময়ে জমা দিয়েছেন। প্রক্রিয়াটি সহজ হলেও তা সময়মতো করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনও অসুবিধার সম্মুখীন না হন।