মণিপুরে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও হিংসার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের জেরে বিজেপি সরকার মঙ্গলবার থেকে পাঁচটি উপত্যকা জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে। পাশাপাশি, ইন্টারনেট পরিষেবাও পাঁচ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ২০০০ সিআরপিএফ জওয়ান সমন্বিত অতিরিক্ত দুটি ব্যাটালিয়ন মণিপুরে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার শিক্ষার্থীদের একটি ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল এলপি আচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি পূরণের সময়সীমা দেয়। সেই সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা রাজভবনের দিকে মিছিল করলে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে তাদের থামানোর চেষ্টা করে।
ইম্ফল পশ্চিম জেলার খোয়াইরামবন্দ ইমা (মায়েদের) মার্কেটে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও মহিলারা রাজভবনে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বিক্ষোভকারীরা ইট-পাথর, বোতল ও ক্ষতিগ্রস্ত সাইকেল ছুঁড়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
এদিন সন্ধ্যায়, রাজ্যপাল শান্তির আবেদন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের একটি ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যা করা সম্ভব তা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইম্ফল উপত্যকায় বিক্ষোভ চলছে। বিশেষত, বিশ্ণুপুরে রকেট বোমা হামলা ও জিরিবামে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ছয়জন নিহত হওয়ার পর আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীরা পুলিশের ডিজিপি ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার অপসারণ এবং ইউনিফাইড কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রী ও নির্বাচিত সরকারের হাতে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন।
ইম্ফল পশ্চিমের কাকওয়ায় মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে সামিল হয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সক্রিয়তার অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ডিজিপি রাজীব সিং এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং-এর কুশপুত্তলিকা দাহ করে।